বরিশাল সিটির সড়কবাতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করল ওজোপাডিকো
বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) কাছে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় নগরীর সড়কবাতি ও পানির লাইনের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো), বরিশাল। গত রোববার বিকেল ৪টা থেকে এই অভিযান শুরু করে নগরীর সব সড়কের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ওজোপাডিকো বরিশাল বিভাগ।
এদিকে সিটি করপোরেশন বলছে, বকেয়া বিলের বিপরীতে মোটা অঙ্কের একটি বিল গ্রহণের তিনদিনের ব্যবধানে সড়কবাতি এবং পানি সরবারহ লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো নোটিশও দেওয়া হয়নি। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ভুতুরে গলিতে পরিণত হয়েছে। বাসিন্দারা রাতে চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
ওজোপাডিকোর বরিশালের পরিচালনা ও সংরক্ষণ সার্কেলের সহকারী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, কমপক্ষে ১০ বছর ধরে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছে না সিটি করপোরেশন। এতে বিল বকেয়ায় বৃহৎ একটি অঙ্ক দাঁড়িয়েছে। সেই টাকা উত্তোলন করতে না পেরে আমরাও রয়েছি মন্ত্রণালয়ের চাপের মুখে। অবশেষে সিটি করপোরেশনের সড়কবাতির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান শুরু করতে হয়েছে। গত রোববার থেকে অভিযান শুরু হয়ে তা চলছে।
সহকারী প্রকৌশলী আরও বলেন, ধরুন একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঁচ লাখ টাকা পাব, সে যদি ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে তাহলে তা কীভাবে মেনে নেওয়া যায়? সরকারের কাছে আমাদেরও তো জবাবদিহিতা করতে হয়। আমরাও তো সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
পরিচালনা ও সংরক্ষণ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ টি এম তারিকুল ইসলাম বলেন, বিসিসির কাছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। সেই বকেয়া পরিশোধে অসংখ্যবার তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা আশানুরূপ কোনো সাড়া দেয়নি। সর্বশেষ পরিশোধের তারিখ ছিল ১৮ সেপ্টেম্বর। কিন্তু নির্ধারিত সময়েও তারা তা পরিশোধ করেনি। ফলে অভিযান চালিয়ে সড়কবাতির লাইন বিচ্ছিন্ন করতে হচ্ছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, ১৫ সেপ্টেম্বর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের ৭৮ লাখ টাকা গ্রহণ করে ওজোপাডিকো। আর ১৮ তারিখ তারা নগরীর সব সড়কের বিদ্যুৎলাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়। কেন তারা এই কাজটি করল এবং কার অনুমতি নিয়ে করল, তা বলতে পারছি না। আমাদের কোনো কিছুই জানায়নি। হঠাৎ করে তারা সড়কবাতি এবং পানি সরবরাহের বিদ্যুৎলাইন বিচ্ছন্ন করে দেয়। আজ পর্যন্ত নগরীর সব সড়ক ও পানির লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বিএম কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা কলেজছাত্র ইমরান জানান, তিনদিন ধরে সড়কবাতি জ্বলছে না। আর সিটি করপোরেশনের পানির লাইনেও পানি আসছে না। আমরা খুব ভোগান্তিতে রয়েছি। চলাচল করতে কষ্ট হয়। কী কারণে এমন হচ্ছে তা জানি না।