বিভিন্ন পেশার আড়ালে বাসে ডাকাতি ছিল টার্গেট : র্যাব
টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় একাধিক নারীকে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে আসামিরা। এ ঘটনায় দশ আসামিকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব বলছে—বিভিন্ন পেশার আড়ালে বাসে ডাকাতি করাই ছিল তাদের মূল টার্গেট। র্যাবের দাবি—মূল পরিকল্পনাকারী রতন চার বছর ধরে ডাকাতি করে আসছিল। গত এক মাসে চক্রটি আলিফ ও ঠিকানা পরিবহণেও ডাকাতি করেছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
গত ২ আগস্ট রাতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল এক্সপ্রেসের একটি বাস ২৪ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসার পথে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ তিন জনকে গ্রেপ্তার করে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। এতে তিন জনই ডাকাতির কথা স্বীকার করে। আর, ধর্ষণের কথা স্বীকার করে রাজা মিয়া।
সবশেষ গতকাল রোববার ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তারা একাধিক নারীকে শ্লীলতাহানির কথা স্বীকার করেছে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘রতন হোসেন ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী। তিনি পেশায় গাড়ির হেলপার। তার বিরুদ্ধে আগেও ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া রতন ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার হওয়া নূরনবী, জীবনসহ আরও কয়েক জনকে নিয়ে রাস্তা বন্ধ করে সাভার পরিবহণের একটি বাস ডাকাতি করেন। ওই বাস ডাকাতির ঘটনায় রতন গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় দেড় বছর কারাভোগের পর জামিনে বের হয়ে ২০২০ সালে পুনরায় নূরনবী, জীবন ও আউয়ালকে নিয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি অটোরিকশা ছিনতাই করেন। তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতা জীবনকে ধাওয়া করে ধরে ফেলে। এ ঘটনায় করা মামলায় জীবন গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় এক বছর কারাভোগ করেন। কারাভোগের পর জামিনে বের হয়ে আবারও দল নিয়ে সাভার, গাজীপুর বা সিরাজগঞ্জ এলাকায় মহাসড়কে আরও বেশ কয়েকটি ডাকাতি করে। রতনের অন্যতম সহযোগী জীবন পেশায় গাড়ির হেলপার (চালকের সহকারী)। হেলপার পেশার আড়ালে সে বেশ কয়েকটি পরিবহণ ডাকাতিতে অংশগ্রহণ করে। টাঙ্গাইলে ডাকাতির ঘটনায় সে যাত্রীদের মালামাল লুটের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। এর আগেও জীবন ২০১৮ ও ২০২০ সালে দুটি ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে।’
র্যাবের অভিযানে মূল পরিকল্পনাকারী মো. রতন হোসেন, তার সহযোগী মো. আলাউদ্দিন, মো. সোহাগ মন্ডল, খন্দকার মো. হাসমত আলী ওরফে দীপু, মো. বাবু হোসেন ওরফে জুলহাস, মো. জীবন, মো. আব্দুল মান্নান, মো. নাঈম সরকার, রাসেল তালুকদার, মো. আসলাম তালুকদার ওরফে রায়হান গ্রেপ্তার হন। এ সময় ২০টি মোবাইল, ১৪টি সিম ও ক্ষুর উদ্ধার করা হয়। আর লুট হওয়া দুটি রূপার চুড়ি উদ্ধার করা হয়।
আলোচিত এ মামলার তদন্ত করছে টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ।