ব্যবসায়ীরা কথা দিয়েও রাখেনি : বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহ না করে মজুত করার চেষ্টা করেছে। ওইসময় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে রমজান মাসে ভোজ্যতেলের দাম না বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছিলাম আমরা। তারা ওইসময় কথা দিয়েও রাখেনি। সয়াবিন তেল নিয়ে ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কারসাজি করেছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী, মিলার ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, এস আলম গ্রুপের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন আহমেদ, টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিকুল আথহার তাসলিম, বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববাজারের ভোজ্য তেলের মূল্য পরিস্থিতি প্রচার মাধ্যমে তুলে ধরা প্রয়োজন। ভোজ্যতেল একটি আমদানিনির্ভর পণ্য। দেশের মোট চাহিদার মাত্র ১০ ভাগ স্থানীয় উৎপাদন থেকে মিটানো হয়, অবশিষ্ট ৯০ ভাগই আমদানি করে প্রয়োজন মিটাতে হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের মূল্য ও পরিবহণ ব্যয় বৃদ্ধি পাবার কারণে আমাদের দেশেও এর প্রভাব পরেছে। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি, যাতে ভোজ্যতেলের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে থাকে এবং বাজারে যাতে তেলের কোনো ঘাটতি না হয়, সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে। আমাদের প্রতিবেশি দেশগুলোতেও ভোজ্যতেলের মূল্য আমাদের দেশের তুলনায় বেশি বেড়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন প্রতি লিটার বোতলজাত ভোজ্য তেলের মূল্য ১৯৮ টাকা, একই সময়ে ভারতে বাংলাদেশি মূদ্রায় প্রায় ২২৪.৬৫ টাকা, পাকিস্তানে প্রায় ২৩৮.৬৯ টাকা এবং নেপালে প্রায় ২১৪.৭৫ টাকা। আমরা কঠোরভাবে মনিটরিং করছি যাতে তেলের ক্রয় মূল্য, পরিবহণ ব্যয়, শুল্কসহ সবধরনের ব্যয় ধরে যৌক্তি পর্যায়ে ভোজ্য তেলের মূল্য নিশ্চিত করা যায়। ভোজ্য তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে মিলগেইট থেকে শুরু করে পাইকারি এবং খুচড়া পর্যায়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। অনিয়ম ধরা পরলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পবিত্র রমজান উপলক্ষে দেশের ১ কোটি নিম্নআয়ের পরিবারকে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ভর্তুকি মূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে। আগামী জুন থেকে আবারও এ এক কোটি পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে ভোজ্যতেল সরবরাহ করা হবে।
এক প্রশ্নে জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ১০ ভাগ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমদানিকৃত তেল খালাস, শুল্কায়ন এবং পরিবহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিলারদের নামে ভোজ্যতেলের সাপলাই অর্ডার (এসও) এর মাধ্যমে তেল উত্তোলনের সময় কমিয়ে ১৫ দিন করা হয়েছে, যাতে বাজারে তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে।