ভৈরবে ডাকাতি প্রতিরোধে মহাসড়কের পাশের ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার অভিযান
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় ডাকাতি প্রতিরোধে মহাসড়কের দুই পাশে গজিয়ে ওঠা ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার করা হয়েছে। আজ শনিবার উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নে ঢাকা-ভৈরব-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে এ অভিযান পরিচালনা করেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ফারুক মিয়া।
অভিযানে কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নারী-পুরুষ সদস্য, স্থানীয় বিশিষ্ট নাগরিক, গ্রাম পুলিশ বাহিনীর সদস্য ও শ্রমিকরা অংশ নেন। এ সময় কালিকাপ্রসাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে গাজীরটেক ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের দুই পাশের ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, বর্ষাকালে মহাসড়কের দুই পাশে বিভিন্ন আগাছা গজিয়ে গভীর ঝোপ-ঝাড়ের জন্ম হয়। আর এই গজিয়ে উঠা ঝোপ-ঝাড়ের আড়ালকে ডাকাত ও ছিনতাইকারীরা সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে। এইসব ঝোপে লুকিয়ে থেকে টহল পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে সুযোগ বুঝে বিভিন্ন যানবাহনসহ পথচারীদের আটকে ডাকাতি ও ছিনতাই করে সর্বস্ব লুটে নেয়।
অনেক সময় দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে হতাহতের ঘটনা ঘটিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। ডাকাতি-ছিনতাই প্রতিরোধে ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক মিয়াসহ তাঁর পরিষদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা।
অভিযানে অংশ নেওয়া মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা যারা এলাকার বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মসূত্রে বসবাস করি, এলাকার ভালো সংবাদের জন্য মুখিয়ে থাকি। কিন্তু ভালোর পরিবর্তে যখন চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই ও মাদকের সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাই, তখন খুবই ব্যথিত ও লজ্জিত হই। ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিষদ যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা খুবই প্রশংসার দাবি রাখে। তাঁর মতো এমন চিন্তা-চেতনা পোষণ করে দেশের অন্য এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও যদি এমন কর্মসূচি গ্রহণ করেন, তবে সারা দেশের সড়ক পথের ডাকাতি-ছিনতাই অনেক কমে যাবে। পুলিশ বাহিনীর কাজেও বেশ সহায়তা করা হবে।
একই অভিমত পোষণ করেন কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. সবুজ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান।
এই অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে কালিকাপ্রসাদ ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ফারুক মিয়া বলেন, ‘প্রতি বছর এই বর্ষা মৌসুমে আমার ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণপাশ থেকে গাজীরটেক ব্রিজ পর্যন্ত এলাকায় প্রায়ই বিভিন্ন যানবাহন ও পথচারীদের গতিরোধ করে ডাকাতি-ছিনতাই সংগঠিত হয়। এইসব ঘটনায় মানুষজন টাকা-মালামাল হারানোর পাশাপাশি আঘাতপ্রাপ্তও হন। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ-গ্রামপুলিশ চৌকিদার ও গ্রামবাসী ছুটে এলেও অপরাধীদের ধরা যায় না। তারা সড়কের দুই পাশে এইসব ঝোপ-ঝাড়ে লুকিয়ে থেকে অপরাধ করে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। তাই মহাসড়কের পাশে গজিয়ে ওঠা এইসব ঝোপ-ঝাড় কেটে ফেলার এই অভিযান শুরু করেছি।’ তিনি এ সময় যার যার বাড়ির পাশের অপ্রয়োজনীয় ঝোপ-জঙ্গল কেটে ফেলতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।