যুবলীগনেতার মামলায় বাসরঘরে নববধূ রেখে পালালেন বর
বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলায় বিয়ে করে বৌ বাড়িতে আনলেও বাসরঘরে যাওয়া হয়নি ইরানের। বাসর হয়নি ইরান-নার্গিস দম্পতির। বিয়ের দিনেই যুবলীগনেতার সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে মামলায় আসামি হয়ে স্ত্রীকে বাসরঘরে রেখে পালিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের বাগধা গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল খালেক খানের ছেলে ইরান খান পাশের আমবৌলা গ্রামের মোক্তার আলী মৃধার মেয়ে নার্গিস খানমকে বিয়ে করেন গত সোমবার। সন্ধ্যায় নববধূকে নিয়ে আসেন বাড়িতে। ওই বিয়ের বরযাত্রী ছিলেন ইরানের ভগ্নিপতি জেলা উত্তর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল মোল্লা।
বিয়ের অনুষ্ঠানে আসা আবুল মোল্লা বাগধা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল খানের সঙ্গে পশ্চিমপাড় বাজারে বসে কথা বলছিলেন। বিষয়টি দেখে এমদাদুলকে মারধর করে বাগধা ইউনিয়নের ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান তালুকদার। বিষয়টি জানতে পেরে যুবদলনেতা আবুল মোল্লা এমদাদুলকে মারধরের কারণ জানতে চান যুবলীগনেতা মশিউর রহমানের কাছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটকাটি ও হাতাহাতি হয়।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যুবদলনেতা আবুল মোল্লাকে বিয়ে বাড়ি গিয়ে খুঁজতে থাকেন। এ সময় আবুল মোল্লা ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। যুবলীগনেতার করা মামলায় পুলিশ ওই রাতেই যুবদল ও ছাত্রদলের তিন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
অপরদিকে বাগধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোকলেসুর রহমান বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আগৈলঝাড়া থানায় মামলা করেন। মামলায় আবুল মোল্লা এবং নববিবাহিত ইরান খান ও তার ভাই মিরান খানকেও আসামি করা হয়।
মামলার খবর শুনে বাসরঘরে নববধূ রেখেই বাড়ি থেকে পালান ইরান খান। নববধূ নার্গিস খানম অভিযোগ করে বলেন, ‘বাজারের ঘটনায় আমার স্বামী কিছুতেই জড়িত নন। তিনি তখন বর সেজে আমাকে নিয়ে বাড়ি আসছিলেন। অথচ তাকে আসামি করা হয়েছে। আমাকে বাসর ঘরে রেখে তাকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এমন মিথ্যা মামলা করে হয়রানির আমি ন্যায়বিচার চাই।’
মামলার বাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোকলেসুর রহমান দাবি করেন, বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছি। সেই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
যুবদলনেতা আবুল মোল্লা জানিয়েছেন, বাজারে ওদের সঙ্গে তেমন কোনো কথা হয়নি। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল খানের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমার সঙ্গে কেন কথা বলেছে এই প্রশ্ন তুলে এমদাদুলকে মারধর করে। আমি ওদের গিয়ে বলেছি বিয়ের দিনে মারধর করা উচিত হয়নি। এর পরই বিকেলে শুনি আমাদের নামে মামলা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন ন্যূনতম তদন্তও করল না।
আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম বলেন, মারামারির ঘটনায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এজাহারনামীয় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোনো আসামির বিয়ে হচ্ছে না বাসর হচ্ছে সেটি দেখার বিষয় আমাদের না।’