রাজশাহীতে প্রকাশ সিং হত্যাকাণ্ডে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
রাজশাহীতে চাচির পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় প্রকাশ সিং হত্যাকাণ্ডে চার জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার দুপুরে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার শ্যামপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাদল মণ্ডল (৪৫), তানোর উপজেলার এনায়েতপুর চোরখৈর গ্রামের বিমল সিং (৫০), তাঁর স্ত্রী অঞ্জলী রাণী (৪৫) ও ছেলে সুবোধ সিং (২০)।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, রাজশাহী নগরীর নবরূপ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের পরিবেশক (কর্মচারি) নিহত প্রকাশ সিং-এর চাচি অঞ্জলী রাণীর সঙ্গে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার শ্যামপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাদল মণ্ডলের পরকীয়া চলছিল। প্রকাশসহ তাঁর বাবা এর প্রতিবাদ করে আসছিলেন। এতে বাদল মণ্ডল তাঁদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন।
একপর্যায়ে ২০২১ সালের এক সন্ধ্যায় বাদল মণ্ডল অঞ্জলী রাণীর ঘরে ঢোকার সময় প্রকাশ সিং-এর পরিবারের সবাই দেখে ফেলেন। এ সময় বাদলকে ধরার চেষ্টা করলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার প্রায় এক মাস পর ২৮ এপ্রিল বাদলমণ্ডলসহ অজ্ঞাত আসামিরা পরিকল্পিতভাবে ধারাল অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ সিং-এর মাথায়, গলায়, পিঠে ও বাম হাতে কুপিয়ে হত্যা করে।
পরদিন ২৯ এপ্রিল সকালে তানোর থানার বংশীধরপুর গ্রামের ব্রিজের কাছ থেকে নিহতের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই নিহত প্রকাশের বাবা বাদি হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে তানোর থানায় হত্যা মামলা করেন।
সে মামলার পুলিশি তদন্তেও একই তথ্য উঠে আসে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজশাহীর তানোর উপজেলার চোরখৈর গ্রামের প্রকাশ সিং তাঁর চাচি অঞ্জলী রানী ও বাদল মণ্ডলের পরকীয়া জেনে যান। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে চাচি অঞ্জলী, চাচা বিমল সিং, চাচাতো ভাই সুবোধ সিং ও কথিত প্রেমিক বাদল মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিলে স্বাক্ষ্য গ্রহণ, তথ্য উপাত্ত, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত গতকাল রোববার এই রায় দেন।