রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান উত্তেজনা বাড়াচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান স্থানীয় জনগণের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।
বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার এবং আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সঙ্গে আজ বুধবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এ বৈঠক হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গা জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী কক্সবাজার ও ভাসান চরে মিয়ানমারের পাঠ্যক্রমের আওতায় রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য মিয়ানমার ভাষায় অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রবর্তন, দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম, জীবিকার সুযোগ, স্বাস্থ্যসুবিধা ইত্যাদির কথা তুলে ধরেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই উদ্যোগগুলো প্রত্যাবর্তনের পরে মিয়ানমারের সমাজে তাদের পুনর্মিলনকে সহজ করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন রাখাইন রাজ্যে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য ইউএনএইচসিআর হাইকমিশনারকে আহ্বান জানান। হাইকমিশনার জানান, তাঁর সংস্থা এ বিষয়ে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিপুল সংখ্যক নির্যাতিত ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি এ অঞ্চলে বহুমুখী প্রভাব ফেলতে পারে। রোহিঙ্গারা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে হতাশ হয়ে পড়ছে। এভাবে মাদক ও মানবপাচারের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।’
হাইকমিশনার বিপুল রোহিঙ্গাদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে তিনি বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি আরও জানান, ইউএনএইচসিআর এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা কক্সবাজারে স্থানীয় জনগণের সুবিধার্থে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিচ্ছে।
উল্লেখ্য, হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি গত ২১ মে বাংলাদেশে আসেন। তিনি ২১ মে থেকে ২৩ মে কক্সবাজার ভ্রমণ করেন এবং ২৪ মে ভাসানচর পরিদর্শন করেন।