র্যাব হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিবাদে বাসদের মানববন্ধন
র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিন নামে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের এক কর্মচারীর মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে নওগাঁয় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) জেলা শাখার আয়োজনে আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকেলে শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন। এ ধরনের ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত না হলে রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছেই।
বাসদ নওগাঁ জেলা কমিটির সমন্বয়ক জয়নাল আবেদিন মুকুলের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাসদ নওগাঁ জেলা শাখার উপদেষ্টা আলতাফুল হক চৌধুরী (আরব), সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের জেলা কমিটির সভাপতি কালিপদ সরকার, বাসদ জেলা কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান প্রমুখ।
জয়নাল আবেদিন মুকুল বলেন, অতীতে র্যাবের হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত না হওয়ায় মামলার হওয়ায় আগেই আটক ও বেআইনিভাবে জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনা ঘটছেই। কোনো ব্যক্তি অপরাধ করে থাকতে পারে। কিন্তু কোনো অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার একটা প্রক্রিয়া আছে। অপরাধীদেরও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থাকতে হয় আইনে। কিন্তু আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁকে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
গত বুধবার (২২ মার্চ) সকালের দিকে নওগাঁ শহর থেকে সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়নর ভূমি অফিস সহায়ক সুলতানা জেসমিনকে আটক করা হয়। প্রতারণার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে আটক করা হয়েছে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়। আটকের পর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে প্রথমে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গত শুক্রবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন বলে র্যাব দাবি করছে। কিন্তু স্বজনদের অভিযোগ, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর পর চার দিন অতিবাহিত হলেও ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান। যোগাযোগ করা হলেও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো কথা বলা হচ্ছে না।