লক্ষ্মীপুরে অটোরিকশাচালক ইস্রাফিল হত্যার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ২
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার চালক মো. ইস্রাফিল (১৮) হত্যা মামলায় মো. রুবেল ও বেলাল হোসেন নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অটোরিকশাটি ছিনতাই করতেই চালক ইস্রাফিলকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজ্জামান আশরাফ নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এসপি জানান, প্রযুক্তির সহায়তায় ছিনতাই হওয়া অটোরিকশার ক্রেতা বেলালকে গ্রেপ্তারের পর ঘটনার মূলহোতা মো. রুবেল ও মো. ইউসুফকে শনাক্ত করা হয়। তাদের মধ্যে ইউসুফ পলাতক রয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া রুবেল কমলনগরের চরলরেন্স ইউনিয়নের লরেন্স গ্রামের হোসেন আহম্মদের ছেলে ও বেলাল সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়নের কালিচর গ্রামের তোফায়েল আহমেদের ছেলে।
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ইউসুফ গত ১৮ জানুয়ারি রাত ৭টার দিকে কমলনগরের চরলরেন্স বাজার থেকে চৌধুরীর বাজার যাওয়ার জন্য ইস্রাফিলের অটোরিকশায় ওঠেন। পথে গনি মিয়া ব্রিকস ফিল্ড এলাকা থেকে রুবেল অটোরিকশায় ওঠেন। এরপর চৌধুরীবাজার এলাকার পাকা রাস্তার মাথায় পৌঁছে ইউসুফ প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেবেন বলে রিকশা থেকে নামেন। রুবেলও রিকশা থেকে নেমে যান। এর কিছুক্ষণ পর পেছন থেকে রিকশায় বসা থাকা ইস্রাফিলের মুখ চেপে ধরে ঘাড় মটকিয়ে দেন ইউসুফ। এ সময় রুবেল ইস্রাফিলের দুহাত চেপে ধরে রাখেন। পরে তাকে রাস্তায় নিয়ে গলা টিপে মৃত্যু নিশ্চিত করে অটোরিকশা, মোবাইল ফোন ও পকেটে থাকা ৬০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান আসামিরা। পরদিন ১৯ জানুয়ারি সকালে রাস্তার পাশে ইস্রাফিলের মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। ওইদিনই নিহতের বাবা আবুল বাশার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
এসপি মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে সদরের টুমচর এলাকা থেকে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশার ক্রেতা বেলালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার জবানবন্দি অনুযায়ী রাতেই কমলনগরের চরলরেন্স এলাকা থেকে রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। অটোরিকশা ছিনতাই করতেই ইস্রাফিলকে হত্যার পর মরদেহ রাস্তায় ফেলে রেখে যান রুবেল ও ইউসুফ।
লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘শূন্য থেকে শুরু করে মামলার রহস্য উদঘাটনে শতভাগ সফল হয়েছি। একজন আসামি পলাতক রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকেও গ্রেপ্তার করা হবে। গ্রেপ্তার হওয়া রুবেল ও বেলালকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। জেনে শুনে ছিনতাই হওয়া রিকশা ক্রয় করায় বেলালের বিরুদ্ধেও চার্জশিট দাখিল করা হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মংনেথোয়াই মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানা, সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আলম চৌধুরী, ডিআইওয়ান এ কে এম আজিজুর রহমান মিয়া, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন টিটু, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন, কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান।