লক্ষ্মীপুরে মাকে হত্যার পর পোড়ানো মামলায় ছেলের মৃত্যুদণ্ড
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে মা আমেনা বেগমকে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে ফেলার দায়ে তার ছেলে রেদওয়ান হোসেন মিলনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আসামি নিজেই তার মাকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।’
দণ্ডপ্রাপ্ত মিলন রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আশারকোটা গ্রামের বাসিন্দা।
আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে মিলন রাগান্বিত হয়ে তার মা আমেনাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে কাপড় ও কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টার দিকে ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে স্থানীয়রা তাদের বাসার গ্লাস ভেঙে দেখতে পায় মেঝেতে আগুন জ্বলছে। পরে দরজা ভেঙে বাসায় ঢুকে মেঝেতে আমেনার মরদেহ দেখতে পায়। আগুনে আমেনার শরীরের বেশিরভাগ অংশই পুড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মিলনকে আটক করে। একইদিন ভিকটিম আমেনার ভাই টিপু সুলতান বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরে আসামি দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
জবানবন্দিতে বলা হয়, চিকিৎসার জন্য মিলনকে ২-৩ জন ডাক্তার দেখায় তার মা আমেনা। এ নিয়েই মিলন মায়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এতে ফজরের আজানের আগমুহূর্তে মিলন তার মাকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে কাপড় ও কম্বল মুড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
২০২২ সালের ২২ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. অলিউল্লাহ আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় প্রদান করে।