শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় নকল সরবরাহের অভিযোগে সাংবাদিক আটক
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় নকল সরবরাহের অভিযোগে মুহাম্মদ সাজু নামে এক সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে। তিনি আলোকিত পাহাড় নামে স্থানীয় একটি পত্রিকার সম্পাদক। এ ছাড়া নকল করার অভিযোগে এক পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ কেন্দ্রে নকল সরবরাহ করার অভিযোগে গতকাল শুক্রবার মুহাম্মদ সাজু নামে একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ কেন্দ্রের সহকারী কেন্দ্র সচিব জাকির হোসেন জানান, এক পরীক্ষার্থীকে নকল করার সময় ধরা হলে সে সাংবাদিক সাজু নাম জানায়। আমরা নকল করার দায়ে সুদীপ্তা দেওয়ান নামের ওই পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছি। আর দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট নকল সরবরাহকারী সাজুকে আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশে দিয়েছে।
প্রভাষক জাকির হোসেন জানান, ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে আটক সাজু নকল সরবরাহে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রশীদ বিকেল চারটায় জানান, সাংবাদিক মুহাম্মদ সাজু পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। রাত ১০টায় থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়, আটক সম্পাদকের বিরুদ্ধে পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব ও খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মিজানুর রহমান বাদী হয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ দাখিল করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি আদেশ অমান্য করে অনধিকার প্রবেশসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮৬টি শূন্য সহকারী শিক্ষক পদের বিপরীতে ২০১৭ সালে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। কিন্তু নানা জটিলতায় আবেদনপত্র নেওয়ার পর পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হলেও নিয়োগপ্রক্রিয়া আটকে যায়। শুক্রবার অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষার জন্য তিন হাজার ৫৬৭ জনের নামে প্রবেশপত্র ইস্যু করা হলেও পরীক্ষায় অংশ নেন দুই হাজার ২৫২ জন পরীক্ষার্থী।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের শিক্ষকসহ বিভিন্ন নিয়োগে বিগত বছরগুলোতে উৎকোচ নিয়ে অযোগ্যদের নিয়োগ ও দলীয়করণসহ নানা অভিযোগ উঠে আসছে। তবে এবারের খাগড়াছড়িতে শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতার প্রশ্নে কোনো আপস নয় বলে সাফ ঘোষণা দিয়েছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু। তিনি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেলে সরাসরি তাঁকে জানানোর অনুরোধ করেছেন।