সমবায়ের উপ-নিবন্ধক ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলা
সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক মুহাম্মাদ গালীব খান ও তাঁর স্ত্রী ইস্টার্ণ ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে ট্রেড অপারেশন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট তানিয়া সুলতানা রাখির নামে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তাঁদের অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে- ফরিদপুরের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৩০০ শতাংশ জমি, রাজধানীর খিলগাঁওয়ে তিন দশমিক ৫০ কাঠা জমি, বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পে সাড়ে তিন কাঠার প্লট, ধানমন্ডির সাত নম্বর রোডের ফ্ল্যাট, রাজধানীর খিলগাঁওয়ে এক হাজার ৪১৬ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও শেয়ারবাজারে বড় অংকের বিনিয়োগ।
স্বামী-স্ত্রীর নামে দালিলিক হিসাবে এসব সম্পদের মূল্যমান মাত্র পাঁচ কোটি টাকা ধরা হলেও বাস্তব মূল্য কয়েক গুণ বেশি। দুদকের অনুসন্ধানে এসব সম্পদের কোনো বৈধ উৎস না পাওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন।
মামলায় সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক মুহাম্মাদ গালীব খানের বিরুদ্ধে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে দুই কোটি ১৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ও তার স্ত্রী ইস্টার্ণ ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে ট্রেড অপারেশন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট তানিয়া সুলতানা রাখির বিরুদ্ধে দুই কোটি ৮৩ লাখ ২৫ হাজার ৫২০ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তানিয়া সুলতানা রাখির বক্তব্য ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, তানিয়া সুলতানা রাখি নিজ নামে ফরিদপুরের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২৫৪ শতাংশ জমি, রাজধানীর খিলগাঁওয়ে তিন দশমিক ৫০ কাঠা জমি, বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পে সাড়ে তিন কাঠার প্লট এবং ধানমন্ডির সাত নম্বর রোডের অ্যালায়েন্স প্রপার্টিজ লিমিটেড থেকে কেনা একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা পাওয়া যায়। সবমিলিয়ে দালিলিক হিসাবে এক কোটি এক লাখ ৮০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।
অন্যদিকে রাখির নামে বিভিন্ন সময়ে চালু করা এফডিআর, পারিবারিক সঞ্চয়পত্র, শেয়ারে বিনিয়োগ, নিজ নামে বিভিন্ন ব্যাংকে চালু করা সেভিংস ও চলতি অ্যাকাউন্টে টাকা জমা, গাড়ি কেনাসহ মোট ছয় কোটি ২৪ লাখ ১২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। সবমিলিয়ে সাত কোটি ২৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে চার কোটি ৪২ লাখ ৬৮ হাজার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া গেলেও দুই কোটি ৮৩ লাখ ২৫ হাজার ৫২০ টাকার সম্পদের স্বপক্ষে কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।
তাঁর স্বামী ও সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক মুহাম্মাদ গালীব খানের বিরুদ্ধে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে দুই কোটি ১৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মুহাম্মাদ গালীব খানের নিজ নামে রাজধানীর খিলগাঁও, মেরাদিয়ায় এক হাজার ৪১৬ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও ফরিদপুরে ৬২ শতাংশ জমিসহ ৩৪ লাখ ৬৩ হাজার ৮০০ টাকায় স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অন্যদিকে তাঁর নামে এফডিআর ও সঞ্চয় হিসাবসহ মোট দুই কোটি ৪১ লাখ ৮৮ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট দুই কোটি ৭৬ লাখ ৫২ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য পায় দুদক।
অনুসন্ধানকালে মুহাম্মাদ গালীব খানের নামে শেয়ার বিনিয়োগ পাওয়া যায় এক কোটি ২৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। ঐ টাকাসহ দুই কোটি ১৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকার সম্পদের বৈধ উৎস পায়নি দুদক।
তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলা দুটি মামলা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।