হবিগঞ্জে পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেটসহ আরো ১৩ জন করোনায় আক্রান্ত
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও চার পুলিশ সদস্য, জেলা প্রশাসনের এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ নতুন ১৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে গতকাল সোমবার হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান করোনায় আক্রান্ত হন। এ নিয়ে হবিগঞ্জ জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৮ জনে।
হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলিছুর রহমান উজ্জল আজ মঙ্গলবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নতুন আক্রান্তদের মধ্যে চুনারুঘাট থানার পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ আটজন, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, নবীগঞ্জ উপজেলায় এক স্বাস্থ্যকর্মীসহ দুইজন এবং বাহুবল ও লাখাই উপজেলায় একজন করে মোট দুজন রয়েছেন।
সিলেট থেকে ঢাকার পিসিআর ল্যাবে পাঠানো নমুনা পরীক্ষায় এদের করোনা ধরা পড়ে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাবে হবিগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত ৮৮ জনের মধ্যে নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী ২৫ জন এবং জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৫ জন। সেই হিসাবে আক্রান্তদের ৪০ জনই করোনাযোদ্ধা। অন্যরা নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষ। এদের মধ্যে থেকে চুনারুঘাট উপজেলায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, আজ সুস্থ হয়েছেন জেলার প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়া ব্যক্তি। এ ছাড়া লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আক্রান্ত এক চিকিৎসকের পরপর দুটি নমুনার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। আর একটি রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেই তাঁকে সুস্থ ঘোষণা করা হবে।
এদিকে, সিলেট বিভাগের মধ্যে হবিগঞ্জেই সর্বোচ্চ সংখ্যক লোক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আশঙ্কাজনকহারে আক্রান্ত হয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। যে কারণে করোনার ‘রেড জোন’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে হবিগঞ্জকে।
অন্যদিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ মনে করছে, হবিগঞ্জে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের অন্যতম কারণ করোনার ‘ক্লাস্টার’ এলাকা নারায়ণগঞ্জ থেকে ফেরত লোকজন। এ ছাড়া ঢাকাসহ অন্যান্য স্থান থেকে আগতদের মাধ্যমেও বেড়েছে সংক্রমণ।
হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলিছুর রহমান উজ্জ্বলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১১ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা এক গাড়িচালকের মাধ্যমে করোনার থাবা শুরু হয় হবিগঞ্জে। এর পর প্রায় প্রতিদিনই বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। যাদের অধিকাংশই নারায়ণগঞ্জ ফেরত। যে কারণে তাঁরা মনে করছেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ফেরত লোকজনের মাধ্যমেই হবিগঞ্জে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে।