হালদায় আবার মৃত ডলফিন উদ্ধার
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের মইশকরম এলাকায় হালদা নদীতে ভাসমান অবস্থায় একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।
আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে নদীতে ডলফিনটি ভেসে যেতে দেখে স্থানীয় লোকজন সেটি টেনে তীরে তোলেন।
স্থানীয় প্রশাসন বলছে, ডলফিনটির গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। কয়েকদিন আগে এটির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এর মুখে জালের অংশ বিশেষ আটকে ছিল।
এর আগে ৮ মে হালদা নদীর হাটহাজারী মদুনাঘাট সংলগ্ন অংশ থেকে একটি ভাসমান ডলফিন উদ্ধার করা হয়, যেটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়েছিল বলে উদ্ধারকারী ও স্থানীয় প্রশাসন জানায়। এ নিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে হালদায় দুটি মৃত ডলফিন উদ্ধার হলো। এর আগে গত ২১ মার্চ আরেকটি ডলফিন মারা গিয়েছিল আজিমের ঘাট এলাকায়।
আজ সকালে রাউজানের উরকিরচর ইউনিয়নের মইশকরম গ্রাম সংলগ্ন হালদা নদীতে ডলফিনটি ভেসে যেতে দেখে স্থানীয়রা। এর কিছুক্ষণ পরই সেখানে পৌঁছান হালদা রক্ষা কমিটির সদস্য সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম মুন্না। তিনি বলেন, ‘ডলফিনটির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে এটির মুখে ভাসা জালের অংশ আটকানো ছিল। জালে আটকা পড়ায় সম্ভবত এটি মারা গেছে। পরে জাল কেটে ডলফিনটি হয়তো ছেড়ে দেওয়া হয়। এটি নদীতে ভেসে আসছিল। এলাকার লোকজন দেখতে পেয়ে টেনে পাড়ে তোলে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘ডলফিনটি প্রায় সাতফুট লম্বা এবং ৭০ কেজির মতো ওজন হতে পারে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘গত কয়েকদিন মা মাছের ডিম ছাড়া উপলক্ষে নদীতে টানা টহল দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে কোনো ড্রেজার চলেনি। মৃত ডলফিনটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই। কীভাবে মারা গেছে সেটি স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত করে দেখবে।’
রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জোনায়েদ কবীর সোহাগ বলেন, ‘এটি কয়েকদিন আগে মারা গেছে। তাই শরীর ফুলে উঠেছে। দৈর্ঘ্য পাঁচ ফুটের মতো হবে। হালদায় এখন প্রতিদিনই নিয়মিত টহল চলছে। এটি কর্ণফুলী নদীতে মারা গিয়ে এদিকে ভেসে আসতে পারে। অথবা প্রাকৃতিক নিয়মেই মারা যেতে পারে। মৃত ডলফিনটি নদী পাড়ে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।’
হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির হিসাব মতে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত হালদায় ২৫টি ডলফিন মারা গেল। ২০১৮ সালের তাদের করা জরিপে হালদায় ডলফিনের সংখ্যা ছিল ২০০টির মতো।