হোসেনী দালান থেকে শুরু, ধানমণ্ডি গিয়ে শেষ তাজিয়া মিছিল
মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ধর্মীয়ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ পবিত্র আশুরা উপলক্ষে পুরান ঢাকার হোসেনী দালান থেকে শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিল ধানমণ্ডি গিয়ে শেষ হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কঠোর নিরাপত্তায় রাজধানীর হোসেনী দালান থেকে এ মিছিল শুরু হয় মিছিলটি চকবাজার, লালবাগ, আজিমপুর-নিউমার্কেট হয়ে ধানমণ্ডি লেকে গিয়ে শেষ হয়। তাজিয়া মিছিল শুরুর আগে মহড়া দিয়েছে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন।
শিয়া মুসলমানরা তাজিয়া মিছিলে শোকের প্রতীক হিসেবে খালি পায়ে পুরুষরা কালো পাঞ্জাবি-পাজামা এবং নারীরা কালো কাপড় বা বোরকা পরে মিছিল করেছেন। হায় হোসেন, হায় হোসেন মাতম ও বুক চাপড়ে ফোরাত নদীর তীরের কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার স্মরণ করেন তারা। এছাড়া মাতমকারীদের সেবার জন্য নিয়োজিত ছিল স্বেচ্ছাসেবকরা। তাদের পানি ও শরবত বিতরণ করতে দেখা যায়।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে পুরান ঢাকার হোসেনী দালান ইমামবাড়া, বড় কাটারা ইমামবাড়া ও এর আশপাশের শিয়া সম্প্রদায় কেন্দ্রিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন র্যাবের সদস্যেরাও। হোসেনী দালান ইমামবাড়া, বড় কাটারা ইমামবাড়া ও এর আশপাশের শিয়া সম্প্রদায়ের বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, তাজিয়া মিছিলের সামনে, মাঝে ও পাশে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
কারবালা প্রান্তরে ঘটে যাওয়া ট্র্যাজেডিকে স্মরণে পুরান ঢাকায় শিয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান হিসেবে খ্যাত ইমামবাড়া থেকে শুরু হয় তাজিয়া মিছিল। এতে অংশ নেয় সব বয়সি নারী-পুরুষ।
হোসেনী দালানের ইমামবাড়া থেকে সকাল ১০টায় বের হওয়া মিছিলটি বকশিবাজার, উর্দুরোড, লালবাগ চৌরাস্তা, ঘোড়া শহীদের মাজার, আজিমপুর, নিউমার্কেট হয়ে ধানমণ্ডি ২ নম্বর সড়কের লেক পাড়ে কারবালার ময়দান নামক স্থানে গিয়ে শেষ হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মিছিলে ধর্মীয় স্লোগান সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন, রঙিন পতাকা হাতে নিয়ে চলতে দেখা গেছে পুরুষ, তরুণ, নারীদের। উপস্থিত ছিল বয়স্ক থেকে শিশুরাও। কালো-লাল-সবুজের নিশান উড়িয়ে কারবালার শোকের মাতম ওঠে শত শত মানুষের অংশ নেওয়া এই মিছিলে। বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ কান্নার মাতম ধ্বনি তুলে এগিয়ে যায় মিছিলটি।
মিছিলের প্রথম অংশে দুটি কালো গম্বুজ বহন করা হয়েছে। জানা গেছে, বিবি ফাতেমাকে স্মরণ করে এই গম্বুজ বহন করা হয়েছে। মিছিলে কালো কাপড় দিয়ে হোসাইন (রা.)-এর প্রতীকী মরদেহ বহন করেন মিছিলে উপস্থিত মানুষেরা।