বিচারক নিয়োগ বিলম্বিত হওয়ায় বিচারকাজে সমস্যা হচ্ছে
বিচার বিভাগের অর্পিত দায়িত্ব পালনে সরকারের অন্যান্য বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। তিনি বলেছেন, বিচারপতি ও বিচারক নিয়োগ বিলম্বিত হওয়ায় বিচারকাজে নানা সমস্যা হচ্ছে।
আজ শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।
উচ্চ আদালতের বিচারপতি এবং নিম্ন আদালতের বিচারক ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের এই সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মামলার রায়ের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশের সব ক্রান্তিলগ্নে বিচার বিভাগ উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছে। বিচার বিভাগ বিতর্কমুক্ত রাখাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এস কে সিনহা বলেন, ‘পাঁচ বছর শাসন করতে পারবে। কিন্তু নিরপেক্ষভাবে কোনো নির্বাচন দিতে পারবে না। এটা রাজনীতিবিদদের জন্য দেউলিয়াপনা। বিচার বিভাগ কিন্তু এই প্রতিযোগিতায় কোনো দিন থাকেনি। যারা ক্ষমতার কাছাকাছি থাকে, তাদের মধ্যে এই আধিপত্য বিস্তারের প্রবণতা বেশি মাত্রায় প্রতীয়মান হয়।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, পৃথককরণের নয় বছরে নানা সীমাবদ্ধতা নিয়েই বিচার বিভাগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর মামলা নিষ্পত্তির হারও বাড়ছে। তবে যথাসময়ে বিচারপতি ও বিচারক নিয়োগ এবং অবকাঠামো ও জনবল সংকটের সমাধান হলে আরো বেশি মামলা নিষ্পত্তি করা যেত।
এস কে সিনহা বলেন, ‘আগস্ট মাসে আটজন বিচারকের নাম পাঠানো হয়, যেটা সম্মতি সহকারে। আজকে ডিসেম্বর মাসের শেষ লগ্ন। আজ পর্যন্ত বিচারক নিয়োগ করা গেল না। বিজ্ঞ আদালতে সময়মতো আইন মন্ত্রণালয় থেকে রিকুইজিশন না দেওয়ায় বিচারক নিয়োগে বিলম্বিত হয়। আদালতের স্থান সংকুলানের তীব্র সংকটের বিষয়টি আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রীর নজরে এনেছি। তা সত্ত্বেও কোনো আশাব্যঞ্জক ফল পাওয়া যায়নি।’
এ ছাড়া প্রধান বিচারপতি নতুন ট্রাইব্যুনাল গঠন করলে আনুষঙ্গিক সুবিধা নিশ্চিত করা, নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধি, ই-জুডিশিয়ারি দ্রুত বাস্তবায়ন এবং নিম্ন আদালতে বিচারের পরিবেশ উন্নয়নের তাগিদ দেন। সেই সঙ্গে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরিয়ে নিতে আবারও তাগিদ দেন প্রধান বিচারপতি। আমন্ত্রণপত্রে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নাম থাকলেও সম্মেলনে তিনি বা আইন মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি।