সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তক, ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ দর্শনের প্রবর্তক সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার। ১৯৮১ সালের এই দিনে (৩০ মে) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সামরিক বাহিনীর কিছু বিপথগামী কর্মকর্তা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেন।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর দল বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বিদেশেও এ দিনটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে।
শুক্রবার বিএনপির পক্ষ থেকে এক বাণীতে সাবেক রাষ্ট্রপতির কর্মমুখর জীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দিক ও বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরে কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা মহানগর কমিটির কর্মসূচি জানানো হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র, প্রবন্ধ, নিবন্ধ প্রকাশ করা হবে।
বিএনপি মুখপাত্রের বাণী
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমানের স্মৃতির প্রতি বিনম্র গভীর শ্রদ্ধা ও বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তাঁর অম্লান আদর্শ, দর্শন ও কর্মসূচি ‘জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ’ হিসেবে আজ প্রতিষ্ঠিত বলে উল্লেখ করেন।
বাণীতে বলা হয়, ‘৭১ সালে সারা জাতি যখন স্বাধীনতাযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, যখন রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতায় দেশের মানুষ দিশেহারা, ঠিক সেই মুহূর্তে ২৬ মার্চ মেজর জিয়ার কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষণা সারা জাতিকে স্বাধীনতাযুদ্ধের অভয়মন্ত্রে উজ্জীবিত করে এবং সে প্রেক্ষাপটে দেশের তরুণ, যুবকসহ নানা স্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।’
‘স্বাধীনতাত্তোর দমনমূলক শাসন-শোষণের যাঁতাকলে মানুষের প্রাণ হয় ওষ্ঠাগত, দেশের মানুষের একের পর এক মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা হয়, দেশ একদলীয় সামন্ততান্ত্রিক শাসনের নিষ্ঠুর কবলে পড়ে পিষ্ট হতে থাকে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, মানুষের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয় স্বাধীনতা-উত্তর পর্যায়ে। গণতন্ত্র হত্যা ও অরাজকতার অমানিশার দুর্যোগের মুখে দেশের সিপাহি-জনতার মিলিত শক্তির উত্থানে জিয়াউর রহমান জাতীয় রাজনীতির পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং সংবাদপত্র ও নাগরিক স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর শাসনামলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সংহত হয়।
উৎপাদনের রাজনীতির মাধ্যমে তিনি দেশীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করেন। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ থেকে খাদ্য রপ্তানিকারক দেশে পরিণত করেন।’
বাণীতে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘জাতীয় জীবনের চলমান সংকটে শহীদ জিয়ার প্রদর্শিত পথ ও আদর্শ বুকে ধারণ করেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থ, দলীয় গণতন্ত্র এবং জনগণের ক্ষমতায়নে প্রয়োজন আজ ইস্পাতকঠিন গণ-ঐক্য।’
কেন্দ্রীয় কর্মসূচি
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার সকাল ৬টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। একইভাবে সারা দেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করা হবে।
দলটির ঢাকা মহানগর কমিটির পক্ষ থেকে রাজধানীর সকল ওয়ার্ডের দলীয় কার্যালয়ে মৃত্যুবার্ষিকী কর্মসূচি পালিত হবে। এ ছাড়া জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দলের নেতাকর্মীদের সকাল ১০টায় শেরে বাংলানগরে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস এবং সদস্য-সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।
১১টায় শ্রদ্ধা জানাবেন খালেদা জিয়া
এদিন বেলা ১১টায় জিয়াউর রহমানের শেরে বাংলানগরের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে মাজারে কোরআনখানি ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাবের উদ্যোগে মাজার প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন খালেদা জিয়া।
সকাল ১০ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ড্যাবের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান ও ওষুধ বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা মহানগরী বিএনপির উদ্যোগে ঢাকা মহানগরীতে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করবেন খালেদা জিয়া।