রাষ্ট্রের অন্য দুই বিভাগ হস্তক্ষেপ করবে না, আশা প্রধান বিচারপতির
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের মধ্যে ভারসাম্য নীতির প্রতিফলন হচ্ছে সংবিধানের মূল চেতনার অবিচ্ছেদ্য অংশ।
আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছর পূর্তিতে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক বাণীতে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগ তার সীমার বাইরে গিয়ে অন্য বিভাগের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। তেমনিভাবে আমিও প্রত্যাশা করি, রাষ্ট্রের অন্য দুটি বিভাগ বিচার বিভাগের দায়িত্ব পালনে কোনোরূপ হস্তক্ষেপ করবে না।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রত্যেক বিভাগকে দেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধানের কাঠামোর মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে অপরিহার্যভাবে সৃষ্ট শীতল সম্পর্ককে ইতিবাচক দৃষ্টিতে গ্রহণ করলে প্রত্যেক বিভাগের সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও সমগ্র জনগোষ্ঠীর প্রভূত কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
সুরেন্দ্র কুমার বলেন, ‘সীমিত সম্পদ ও বাজেট সত্ত্বেও সর্বোচ্চ বিচারসেবা প্রদানে বিচার বিভাগ সাধ্যমতো দায়িত্ব পালন করে জনগণের বিশ্বাস অর্জন করেছে। রাষ্ট্রের ক্রান্তিলগ্নে বিচার বিভাগের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত দেশে-বিদেশে নন্দিত হয়েছে। অধিকার, গণতন্ত্র সুসংহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিচার বিভাগের স্বাধীন মতামত ও সিদ্ধান্ত প্রদান দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।’
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘নিম্ন আদালতের বিচারকরা স্বতন্ত্র আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধিমালার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হলে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথককরণের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে। বিচারকদের শৃঙ্খলামূলক বিষয়ে নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকলে নিম্ন আদালতের বিচারকদের পক্ষে স্বাধীনভাবে বিচারকাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে বিঘ্ন সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘রাষ্ট্রের প্রত্যেক বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য স্বতন্ত্র চাকরির বিধান রয়েছে। অধঃস্তন আদালতের বিচারকদের কাজের প্রকৃতি ও ধরন অন্যদের চেয়ে আলাদা। অধঃস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ সংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সামান্য দ্বিমত থাকলেও আশা করছি অচিরেই দূরীভূত হবে।’