প্রধান শিক্ষককে ইংরেজির ক্লাস দেওয়ায় পিটুনি!
ঠাকুরগাঁওয়ের একটি বিদ্যালয়ের রুটিনে প্রধান শিক্ষককে ইংরেজির ক্লাস দেওয়ায় এক সহকারী শিক্ষককে পেটানো হয়েছে। ওই প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকরা ওই শিক্ষককে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পেটান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার বেলা ১১টায় সদর উপজেলার দীপশিখা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষকের নাম ভবানন্দ পাল। তিনি বিএসসি পাস। তাঁকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভবানন্দ পাল অভিযোগ করে বলেন, তাঁকে চলতি বছরের শিক্ষকদের ক্লাস রুটিন করার দায়িত্ব দেন প্রধান শিক্ষক অহিদুল হক। এরপর রুটিন তৈরি করে শিক্ষকদের কাজ বণ্টন করেন তিনি। প্রধান শিক্ষককে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি প্রথমপত্র বিষয় দেন। ওই রুটিন দেখে সোমবার প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হন। এরপর তিনি গালাগাল শুরু করেন। এর একপর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরেই তাঁর শার্টের কলার ধরে মারতে শুরু করেন প্রধান শিক্ষক। এ সময় বিদ্যালয়ের অপর শিক্ষক আবদুল বাতেন, আনন্দ শর্মা, নজরুল ইসলাম ও অফিসের পিয়ন মখলেসুর রহমান মিলে তাঁকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারতে থাকেন। চিৎকার শুনে পথচারীরা গিয়ে উত্তেজিত শিক্ষকদের কাছে থেকে তাঁকে উদ্ধার করে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় রুহিয়া থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে মারধরের বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ করেন ভবানন্দ পাল।
যোগাযোগ করা হলে প্রধান শিক্ষক অহিদুল হক সহকর্মীকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
মারধরের ঘটনায় ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে প্রধান শিক্ষক অহিদুল হকসহ অন্য শিক্ষকদের তাঁদের কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পারভীন আকতার বানুর উপস্থিতিতে তাঁদের থেকে একটি মৌখিক জবানবন্দিও নেওয়া হয়। তবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ঢাকায় থাকায় এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহিন আকতার বলেন, তিনি জরুরি কাজে ঢাকায় আছেন। শিক্ষককে মারপিটের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তাই বিষয়টি দেখার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাঁন মো. শাহরিয়ার বলেন, লাঞ্ছিত শিক্ষক লিখিত অভিযোগ দিলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত বছর কয়েকবার ওই স্কুল পরিদর্শনে যান জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। তখন বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর চেয়ে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা বেশি দেখতে পান তিনি। সেখানে সাতজন শিক্ষক থাকার কথা, কিন্তু এমপিও অনুযায়ী বেতন পান নয়জন শিক্ষক। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের এমপিও বাতিল করার উদ্যোগ নিলে এ বছর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।