এবার ৬০ হাজার টন আম কিনছে প্রাণ
চলতি মৌসুমে প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন আম কিনছে দেশের সর্ববৃহৎ কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ। গত ১৯ মে থেকে তারা আম সংগ্রহ ও পাল্পিং কার্যক্রম শুরু করেছে। চলবে আমের সরবরাহ থাকা পর্যন্ত।
আজ বৃহস্পতিবার নাটোরের একডালায় প্রাণ অ্যাগ্রো লিমিটেডের কারখানায় স্থানীয় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন কারখানার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হযরত আলী।
হযরত আলী বলেন, কারখানায় আম প্রবেশের সময় মান নিয়ন্ত্রক দিয়ে আম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এরপর তা গ্রহণ করা হয়। প্রথমে আমগুলো পাকা কি না তা দেখা হয়, পোকা-রোগমুক্ত এবং পচা কি না তা পরীক্ষা করা হয়। এরপর ল্যাবে পাঠানো হয় ফরমালিন, ব্রিক্স, পি-এইচসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য। আম নেওয়ার সময় আরেকটি জিনিস লক্ষ করা হয় তা হলো আমের ওজন। ল্যাব টেস্টে উত্তীর্ণ হলেই কেবল ওই সব আম কারখানায় প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য নেওয়া হয়। ওই আমগুলো কারখানায় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্রাসিং করে পাল্প সংগ্রহ করে তা অ্যাসেপটিক প্রযুক্তিতে সংরক্ষণ করা হয়। এই পদ্ধতির সুবিধা হলো হিমায়িতকরণ ছাড়া কমপক্ষে এক বছরের জন্য পাল্প নিরাপদ, তাজা ও স্বাদ ধরে রাখা যায়।’
এই পাল্প থেকে প্রাণের বিভিন্ন ম্যাংগো ড্রিংক, ম্যাংগো বার ও জেলিসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরি করা হয়। এ ছাড়া কাঁচা আম থেকে বিভিন্ন ধরনের আচার তৈরি করা হয়। প্রাণের এসব পণ্য এখন বিশ্বের ১৩৪টি দেশে নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে বলে জানান হযরত আলী।
হযরত আলী আরো জানান, নাটোরে প্রাণ-এর কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার কারণে কারখানায় সরাসরি প্রায় সাত হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। আমের মৌসুমে বাড়তি আরো দুই থেকে তিন হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এসব শ্রমিকের প্রায় ৯০ ভাগ নারী। এ ছাড়া কারখানায় আমচাষি ও সরবরাহকারীদের প্রতিষ্ঠানে পরোক্ষ কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়।
প্রাণ অ্যাগ্রো বিজনেস লিমিটেডের কন্ট্রাক্ট ফার্মিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, দিনাজপুর এবং সাতক্ষীরায় প্রাণ-এর প্রায় ১৫ হাজার চুক্তিবদ্ধ আমচাষির কাছ থেকে আম সংগ্রহ করা হয়। প্রাণ এর কৃষি হাবের মাধ্যমে এসব আমচাষিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হয়। স্বল্পমূল্যে উন্নতজাতের চারা প্রদান, সার, কীটনাশক ব্যবহার, রোপণ প্রক্রিয়া ও গাছ থেকে আম সংগ্রহ সম্পর্কে প্রাণ অ্যাগ্রো বিজনেস লিমিটেডের অভিজ্ঞ ফিল্ড সুপারভাইজারদের মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।’
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হেড অব মিডিয়া সুজন মাহমুদ, অ্যাসিসটেন্ট জেনারেল ম্যানেজার (পিআর) জিয়াউল হক ও প্রাণ অ্যাগ্রো লিমিটেড কারখানার সিনিয়র ম্যানেজার (অ্যাডমিন) আবদুল কাদের সরকার।