ঢাকায় হাতকড়া, ঝালকাঠিতে লাশ
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম খানের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে উপজেলার নৈকাঠি গ্রামের বাড়ির পাশ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
তবে পরিবারের দাবি, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার রামপুরার বাসার সামনে থেকে সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা শাহ আলমকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনীর উল গিয়াস বলেন, আজ শনিবার সকালে নৈকাঠি গ্রামের একটি খালের পাশে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমের লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ওসি বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার রামপুরা থেকে শাহ আলমকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত সে সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। আমরা লাশের সুরতহাল করেছি। পরিবারের অভিযোগ দায়ের সাপেক্ষে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
শাহ আলমের বড় ভাই শুক্তাগড় ইউপির সদস্য মাহবুবুর রহমান জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে ঢাকার রামপুরার বাসার সামনে এলে সাদা পোশাকধারী ডিবি পুলিশের সদস্যরা হাতকড়া পরিয়ে তাঁর ভাই শাহ আলমকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। অটোরিকশাচালক বিষয়টি শাহ আলমের পরিবারকে জানালে তাঁরা রামপুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর তাঁরা ঢাকায় ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন কার্যালয়ে খোঁজ নেন। কিন্তু কেউই শাহ আলমকে আটক করেনি বলে দাবি করে।
নিহত শাহ আলমের পরিবারের সদস্যরা জানান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম খান দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার রামপুরায় নিজ বাসায় বসবাস করতেন। মাঝেমধ্যে তিনি গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুরে আসতেন। ঈদ উপলক্ষে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার তাঁর গ্রামের বাড়িতে আসার কথা ছিল। এ জন্য তিনি মাইক্রোবাসও ভাড়া করেছিলেন। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে তাঁর জীবিত ফিরে আসা হলো না। শনিবার সকালে বাড়ির কাছাকাছি একটি জঙ্গলের পাশে তাঁর গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়।
মাহবুবুর রহমান দাবি করেন, তাঁর ভাই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছিলেন। এ কারণে তিনি ঘরের বাইরে বের হলে তাঁদের পরিচিতি মানিক নামের এক কিশোরকে সঙ্গে নিয়ে বের হতেন।
তবে নিহত শাহ আলম স্থানীয়ভাবে ‘জিনের বাদশা’ নামে পরিচিত ছিলেন। রাজাপুর থানার ওসি জানান, শাহ আলমের নামে রাজাপুর ও দেশের বিভিন্ন থানায় হত্যা ও ডাকাতিসহ নানা অপরাধের ঘটনায় মামলা ছিল। তিনি ঢাকার সন্ত্রাসী দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাও ছিলেন।