যুবলীগ নেতাকে ছাত্রলীগ নেতার হাতুড়িপেটা
যশোরের কেশবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতার নেতৃত্বে যুবলীগের এক নেতা ও তাঁর ব্যবসায়িক সহযোগীকে হাতুড়িপেটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার জের ধরে উপজেলা চেয়ারম্যান ও এক কাউন্সিলরের বাসায় পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলা সদরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহরের মেহের আলী মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় তরুণ সংঘের কার্যালয়ে বসে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুজ্জামান শহিদ তাঁর ব্যবসায়িক সহযোগী ঠিকাদার সাফায়েত হোসেন মুক্তির সঙ্গে কথা বলছিলেন।
এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে ৮-১০ জন সশস্ত্র যুবক সেখানে গিয়ে শহিদুজ্জামান শহিদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা শহিদের পায়ে হাতুড়ি দিয়ে পেটায় এবং অস্ত্র দিয়ে জখম করে।
ঠিকাদার সাফায়েত হোসেন মুক্তি এ সময় শহিদুজ্জামান শহিদকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পিটিয়ে তাঁরও হাত ভেঙে দেয়।
যুবলীগ নেতা শহিদুজ্জামান শহীদ এনটিভি অনলাইনের কাছে অভিযোগ করেন, ‘হাতুড়ি বাহিনীর প্রধান আজিজুর রহমান আমার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। টাকা না দেওয়ায় হত্যা করার জন্যই আমার ওপর হামলা করা হয়েছে।’
এ ঘটনার পরপরই শহিদুজ্জামান শহীদের সমর্থকরা সংগঠিত হয়ে শহরে মিছিল করে। মিছিল থেকে হামলার মদদদাতা সন্দেহে পৌর কাউন্সিলর ইবাদাত সিদ্দিক বিপুলের বালিয়াডাঙ্গার বাসভবন ও কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ইবাদাত সিদ্দিক বিপুল অভিযোগ করেন, হামলার সময় তিনি মসজিদে তারাবির নামাজ পড়ছিলেন। বাড়ি এসে জানতে পারেন, ২০-৩০ জন সশস্ত্র যুবক তাঁর বাসভবন ও কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়।
ইবাদাত সিদ্দিক বিপুলের বাসভবন ও কার্যালয়ে হামলার পর পর রাত পৌনে ১১টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা আজিজুরের নেতৃত্বে একদল যুবক শহরের সাহাপাড়ার উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনে হামলা চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেন। তাঁরা জানান, হামলাকারীরা জানালার কাঁচ ভেঙে ফেলে। এ সময় তারা ইট ও হাতুড়ি দিয়ে ঘরের দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। এলাকাবাসী এগিয়ে এলে সশস্ত্র যুবকরা পালিয়ে যায়।
উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আমীর হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা আজিজুরের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের চিহ্নিত দুষ্কৃতকারী আমার জীবননাশের জন্য পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। এ সময় আমার মেয়ে সাবরিনা বিনতে আমীর (২৪) আহত হয়। তাকে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরের চার-পাঁচটি স্থান কেটে গেছে।’
কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাতাব উদ্দীন জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ঘটনা খতিয়ে দেখছে। শহরের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ঘটনার পর রাতেই যশোরের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. বেল্লাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অতিরিক্ত পুলিশ শহরের মোড়ে মোড়ে টহল দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানার জন্য ছাত্রলীগ নেতা আজিজুর রহমানের মোবাইলের একাধিকবার ফোন করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।