স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক সংস্কার
দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দে ভরা ঝালকাঠি সদর উপজেলার আগড়বাড়ী গ্রামের দুই কিলোমিটার সড়ক। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) একাধিকবার জানানো হলেও সড়কটি ঠিক হয়নি। অবশেষে আজ শুক্রবার সকাল থেকে হাতে হাত মিলিয়ে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সেই সড়কটি সংস্কার করেছেন আগড়বাড়ী গ্রামের ১৫ জন ব্যক্তি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লোকজন দুপুর পর্যন্ত হাতে হাত রেখে কাজ করেন। তাঁরা ধানক্ষেত থেকে মাটি এনে খানাখন্দ ভরাট করে, ছিন্নভিন্ন পড়ে থাকা ইটগুলো পুনরায় স্থাপন করেন। ফলে সড়কটি এখন যাতায়াতের উপযোগী হয়েছে বলে জানান গ্রামের লোকজন।
সড়ক সংস্কারকাজে অংশ নেন স্থানীয় খোকন হাওলাদার, মিজান হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন, শহিদুল ইসলাম, মনিরুল হক, জামাল হোসেনসহ ১৫ জন।
এলাকাবাসী জানান, আগড়বাড়ী গ্রামের টাইগার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে চৌপলা-লেশপ্রতাপ হয়ে ঝালকাঠি-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়ক পর্যন্ত এলজিইডির প্রায় দুই কিলোমিটার হেরিংবন্ড সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়েছিল। সড়কজুড়ে গর্ত থাকায় থাকায় যানবাহন তো দূরের কথা, পথচারীরাও যাতায়াত করতে পারতেন না। বর্ষা মৌসুম শুরুর পর থেকেই মরণ ফাঁদে পরিণত হয় সড়কটি। এতে দুর্ভোগে পড়েন পাঁচটি গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অতিকষ্টে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছিল। দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগের শিকার স্থানীয় লোকজন এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি।
অবশেষে আজ শুক্রবার সকালে গ্রামবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সড়কটি সংস্কার করা হয়।
তবে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, সাময়িকভাবে তাঁরা এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছেন। স্থায়ীভাবে সড়কটি মেরামতের জন্য তাঁরা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
স্বেচ্ছায় সড়ক সংস্কারকাজে অংশ নেওয়া শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকবার ঝালকাঠি এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে বলেছি সড়কটি সংস্কার বা পুনরায় নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা কোনো উদ্যোগই নেয়নি। অবশেষে আমরা গ্রামের লোকদের সঙ্গে বৈঠক করে সড়কটি নিজেরাই সংস্কারের উদ্যোগ নিই।’
আগড়বাড়ী গ্রামের খোকন হাওলাদার বলেন, ‘আজ সকালে কাজ শুরু করি। কেউ ধানক্ষেত থেকে মাটি এনে গর্ত ভরাট করেন। আবার কেউ এলোমেলো ইটগুলো গুছিয়ে এক জায়গায় এনে রাখেন। গর্ত ভরাট করার পর ইটগুলো আবার নতুন করে সড়কে দিয়ে দিলাম। এভাবেই প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের ২০টি স্থানে আমরা স্বেচ্ছায় কাজ করে সড়কটি যাতায়াতের উপযোগী করেছি।’
একই গ্রামের মিজান হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের সাধ্য অনুযায়ী স্বেচ্ছায় কাজ করেছি। বাকি কাজটুকু যেন এলজিইডি কর্তৃপক্ষ পাঁচ গ্রামের মানুষের কথা বিবেচনা করে নির্মাণ করে দেয়।’
এ ব্যাপারে জেলা এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী ফুলকাম বাদশা বলেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে সড়ক সংস্কারের জন্য কিছুদিন আগে জরুরি ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। আগড়বাড়ী গ্রামের সড়ক ওই প্রকল্পের মধ্যে থাকলে সংস্কার করা হবে। নয়তো পরেরবার প্রকল্প নিলে সংস্কার করা হবে।’