রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহারের দাবি
রাজবাড়ীর বর্তমান জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম খান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন অভিযোগ করে তাঁকে প্রত্যাহারের দাবি উঠেছে। আগামী ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালনের আগেই রাজবাড়ী থেকে তাঁকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
এই দাবিতে রাজবাড়ী জেলা সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল আজ সোমবার সকালে প্রেসক্লাব চত্বর থেকে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেন সাংবাদিকরা।
মানববন্ধনে জেলার পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমের জেলা প্রতিনিধি, সংবাদ সংগ্রাহকসহ অর্ধশত গণমাধ্যম অংশ নেন।
এর আগে গত ২৫ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মাঠ প্রশাসনে বিএনপি, জামায়াত ও ফ্রিডম পাটির অনুসারী কর্মকর্তা’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম খান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ছিলেন।
এ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করে নিতে বিভিন্ন সংঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
ঘটনার সত্যতা জানতে গতকাল রোববার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করতে যান একুশে টেলিভিশন ও কালের কণ্ঠ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর হোসেন এবং রাজবাড়ী থেকে প্রকাশিত দৈনিক রাজবাড়ী কণ্ঠের আল মামুন আরজু। কিন্তু জেলা প্রশাসক শহরের বাইরের যাচ্ছেন জানিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দেননি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মচারীরা।
এরপর গতকাল বিকেলে জেলা প্রশাসকের বাসভবনে অবৈধ অনুপ্রবেশ চেষ্টার দায়ে ওই দুই সাংবাদিকের নামে মামলা করেন জেলা প্রশাসকের বাসভবনের নিরাপত্তা প্রহরী মো. নজরুল ইসলাম।
আজকের মানববন্ধন থেকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে করা ওই মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান সাংবাদিকরা। আগামী তিন দিনের মধ্যে এই মামলা প্রত্যাহার না করা হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় মানববন্ধন থেকে।
রাজবাড়ীর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি মোহাম্মদ সানাউল্লাহর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা টেলিভিশন সাংবাদিক সমিতির সভাপতি খান মো. জহুরুল হক, সহসভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, টেলিভিশন সংবাদদাতা সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুল কুদ্দুস, দৈনিক যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি আবু মুসা বিশ্বাস, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি বাবু মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব, দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিনিধি এজাজ আহমেদসহ অন্যরা।
বক্তরা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে রাজবাড়ী জেলার ইতিহাস গৌরবের। এ জেলায় একজন শিবিরের সাবেক সভাপতিকে জেলা প্রশাসক হিসেবে দেখতে চান না জেলার মানুষ। তাই আগামী ১৫ আগস্টের আগেই তাঁকে রাজবাড়ী থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।