রথীশ হত্যায় স্ত্রীসহ তিনজনের স্বীকারোক্তি, কামরুল রিমান্ডে
রংপুর স্পেশাল জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবুসোনাকে হত্যার ঘটনায় তাঁর স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ভৌমিক ও তাঁর দুই ছাত্র আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাতে রংপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আরিফা ইয়াসমিন মুক্তার আদালতে তাঁরা ১৬৪ ধারায় এই জবানবন্দি দেন। একই আদালত হত্যা মামলার আরেক আসামি কামরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
রথীশ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রংপুরের কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম জানান, রথীশ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার চারজনকে আজ রাতে আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে নিহত রথীশের স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ভৌমিক ও তাঁর দুই ছাত্র আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। অন্যদিকে অপর আসামি স্নিগ্ধা সরকারের সহকর্মী তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
পাঁচ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত ৩ এপ্রিল রাতে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক রথীশ চন্দ্র ভৌমিক ওরফে বাবুসোনার লাশ উদ্ধার করেন র্যাব-১৩ সদস্যরা। এর আগে রথীশের স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ভৌমিককে আটক করে র্যাব। স্নিগ্ধাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি পরকীয়ার কারণে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
এরপর স্নিগ্ধার দেওয়া তথ্যানুযায়ী র্যাব উদ্ধার অভিযান চালায়। রাত ১১টার দিকে রথীশের বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে তাজহাট মোল্লাপাড়া জামে মসজিদের কাছে স্নিগ্ধার প্রেমিক কামরুল ইসলামের ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির একটি ঘরের মেঝে খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করেন র্যাব সদস্যরা। পরে রথীশের ভাই সুশান্ত কুমার ভৌমিক গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।
এ হত্যার পরিকল্পনা করা হয় দুই মাস আগে। ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করেন স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ভৌমিক ও তাঁর প্রেমিক কামরুল ইসলাম। দুজনই রংপুরের তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। রথীশকে হত্যার পর মাটিচাপা দিতে দুই ছাত্রকেও ব্যবহার করেন তাঁরা।
এদিকে আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ও দ্রুত বিচারের দাবিতে আজ রংপুর নগরীতে শোকর্যালি করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। সকালে নগরীর ধর্মসভা থেকে র্যালিটি বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়। র্যালিতে পরিষদের নেতা রামকৃষ্ণ সোমানি, অজয় প্রসাদ, সুব্রত সরকার, ধনঞ্জয় ঘোষ তাপস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রথীশ চন্দ্র ভৌমিক রংপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ছিলেন।