উঁকি মারায় শেকলে বেঁধে শিশু নির্যাতন!
উঁকি মারার অপরাধে বরগুনার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের লেমুয়া গ্রামে জোবায়ের নামের ১১ বছরের এক শিশুকে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতিত জোবায়ের কদমতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষাথী। তার বাবা আবদুস সালাম মুন্সী একজন দিনমজুর। গুরুতর অবস্থায় জোবায়েরকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় অধিবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিকেলে স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হলে স্থানীয় একটি মুদির দোকানে আশ্রয় নেয় জোবায়ের। এ সময় দোকানের মধ্যে কেউ আছে কি না, তা দেখার জন্য একটি ফাঁকা দিয়ে দোকানের মধ্যে উঁকি দেয় সে। এর পর দোকান মালিক খলিল আকনের ছেলে এমাদুল জোবায়েরকে কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে শুরু করে। বৃষ্টির মধ্যে তালগাছের সঙ্গে শেকল দিয়ে বেঁধে, কাদার মধ্যে চেপে ধরে দীর্ঘ দুই ঘণ্টা নির্যাতন চালানো হয়। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে মাটিতে চিৎ করে শুইয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে বলা হয় জোবায়েরকে। চোখ বন্ধ করলেই চলে নির্যাতন। এ সময় জোবায়েরের বাবা-মা ছেলেকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে তাঁদের সামনেই চলে নির্যাতন। পরে স্থানীয় অধিবাসীদের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জোবায়েরের মা কাজল বেগম (২৮) বলেন, ‘তাঁর ছেলে কদমতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। লাথির আঘাতে তার সামনের দুটি দাঁত আলগা হয়ে গেছে। তা ছাড়া হাতের কনুই নাড়াতে পারছে না জোবায়ের। ডাক্তার এক্স-রে করতে বলেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে তার।’ তিনি আরো বলেন, তাঁরা অতিদরিদ্র পরিবার, তাই জোবায়েরের সঠিক চিকিৎসার ব্যয় সংকুলানের সামর্থ্য নেই তাঁদের।
জোবায়েরের বাবা আবদুস সালাম অভিযোগ করে বলেন, থানায় অভিযোগ না করার জন্য নির্যাতনকারীরা ফোন করে হুমকি দিচ্ছে।
আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর নূরুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। অসুস্থ জোবায়েরের যথাযথ চিকিৎসার জন্য তিনি জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানান।
বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রিয়াজ হোসেন জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।