ভাঙ্গায় জমে উঠেছে পশুর হাট
ঈদুল আজহার আর মাত্র দুদিন বাকি। ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদভারে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাটগুলো। এই শেষ সময়েও ব্যবসায়ী ও খামারিরা গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চলতি বছর কোরবানির জন্য বেশির ভাগ খামারি খড়, ভুসি, কলাই, ঘাস, খৈল প্রভৃতি প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে গরু মোটাতাজা করছেন। কোরবানির হাটে এসব গরু বিক্রি করে খামারিরা ভালো লাভের আশা করছেন। তবে নিষিদ্ধ ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে মোটাতাজা করা গরু ভারত থেকে আমদানি করার ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও দেশীয় খামারিরা লোকসানের আশঙ্কা করছেন।
ভাঙ্গার অন্যতম বৃহত্তম মালিগ্রাম কোরবানির পশুর হাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিক্রির জন্য প্রচুর দেশি-বিদেশি গরু আমদানি করা হয়েছে। গরু ব্যবসায়ীরা জানান, হাটে ক্রেতার সংখ্যা যথেষ্ট বেশি। ভালো বিক্রি ও দাম বেশি পাওয়ায় তাঁরা খুশি। তবে মোটামুটি হাতের নাগালের মধ্যে দাম রয়েছে বলে ক্রেতারা জানান।
সাউতিকান্দা গ্রামের গরু বিক্রেতা ইউনুছ আলী বেপারী জানান, তিনি হাটে ২০টি গরু বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন। তাঁর গরুগুলো প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে মোটাতাজা করা হয়েছে। তার পরও ভারত থেকে আমদানি করা গরুর চেয়ে দাম কিছুটা কম হয়েছে। কোরবানির দিন ঘনিয়ে আসায় সামনের দিনগুলোতে তিনি ভালো লাভের আশা করছেন। ভাঙ্গার আবদুল্লাহবাদ গ্রামের খামারি আবদুল রহমান পাঁচটি গরু বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন। এর একটির দাম উঠেছে দুই লাখ টাকা। আরো বেশি দাম পেলে তিনি বিক্রি করবেন বলে জানান।
দীঘলকান্দা গ্রামের ক্রেতা মো. মজিবুর রহমান খালাসী জানান, তিনি এক লাখ ১২ হাজার দিয়ে একটি গরু কিনেছেন। তিনি আরো জানান, দাম কিছুটা বেশি।
অন্যদিকে, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে অনেকেই পছন্দের ছাগল বিক্রি করতে হাটে এনেছেন। ছাগল বিক্রেতা আনোয়ার জানান, তিনি একটি ছাগল এনেছেন। এর দাম উঠেছে ৫০ হাজার টাকা। তিনিও বেশি দাম পেলে বিক্রি করবেন বলে জানান। ফরিদপুর জেলার অন্যতম মালীগ্রাম পশুর হাটের ইজারাদার তাজ্জুক চোকদার ও আ. মান্নান মাতুব্বর বলেন, কোরবানি সামনে রেখে হাটে প্রচুর দেশি ও বিদেশি গরু আমদানি হয়েছে। তবে এ বছর হাটে গরু আমদানি খুবই কম। সরকারি বিধি অনুযায়ী হাসিলের টাকা নেওয়া হচ্ছে এবং গরু বিক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য যাবতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
হাটে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনরত ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত হারুনুর রশিদ জানান, ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে হাটগুলোতে পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তা টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। সড়কের নিরাপত্তা, দুর্বৃত্তদের রুখতে এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এ ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মন্মথ সাহা (এম কে সাহা) বলেন, ‘কোরবানি সামনে রেখে আমাদের কর্মচারী, কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে কয়েকটি মনিটরিং টিম নিষিদ্ধ ওষুধ প্রয়োগ নিরুৎসাহিত করতে এবং অসুস্থ পশুর চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রতিটি হাটে কাজ করছে। নিষিদ্ধ ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে গরু মোটাতাজাকরণের কুফল সম্পর্কে সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আমাদের টিমগুলো প্রতিটি ওষুধের দোকান, খামারি ও জনসমাগম স্থানে লিফলেট বিতরণ করছে।’