পদ্মায় লঞ্চডুবি : কুষ্টিয়ায় বাড়িতে বাড়িতে মাতম
পদ্মা নদীর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে লঞ্চডুবির ঘটনায় নিহত ৭০ জনের মধ্যে ১৯ জনের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। শুধু কুমারখালী উপজেলার দুই পরিবারের ছয়জনসহ ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। খোকসা উপজেলার চারজন আর বাকিদের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর ও মিরপুর উপজেলায়। নিখোঁজ রয়েছেন খোকসার এক বৃদ্ধা।
গত রাত থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত বেশির ভাগ মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাড়িতে বাড়িতে আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস। লাশগুলো বাড়িতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে সেখানে সৃষ্টি হচ্ছে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিবুল ইসলাম জানান, উপজেলায় বাড়ি এমন নয়জন মারা গেছে লঞ্চডুবিতে। এরা হলেন ছেঁউড়িয়ার মোল্লাপাড়া গ্রামের রেবেকা খাতুন (৫৭), তাঁর ছেলে সাবু (৩০), সাবুর মেয়ে লাবনী (১৪), সাঁওতা গ্রামের রেবেকা খাতুন (৩৫), ছেলে রাইসান (৩) ও ১৪ বছর বয়সী মেয়ে ফাহিমা, খয়েরপাড়া গ্রামের হাফিজ (৩০) ও তাঁর আড়াই বছর বয়সী মেয়ে ফাতেমা, ভাটাপাড়া গ্রামের নাসির ও তাঁর বড় মেয়ে, কুণ্ডুপাড়ার মধুবাবু (৬৫)।
এদিকে কুষ্টিয়া পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক তাজুল ইসলাম জানান, খোকসা উপজেলার জয়ন্তিহাজরা ইউনিয়নের মহিষবাথান গ্রামের একই পরিবারের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে লতা (২২), তাঁর ছোট ভাই এনামুল (১৪), লতার আড়াই বছরের শিশু হোসাইন ও সাতপাখিয়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার (৬৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একই গ্রামের বৃদ্ধা সাকিরুন এখনো নিখোঁজ।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কমলাপুরের বাপ্পি, আড়ুয়াপাড়ার ডা. নবনীতা পাল, মিরপুরের আসাদুল (২৫), আমলার শরীফুল (২২) ও হালসার বাপ্পির (২৮) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তাজুল ইসলাম।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, লাশ আনার জন্য দৌলতদিয়া ঘাটে গাড়ির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থলেও লোকজন রাখা হয়েছে।
কুমারখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহেলা আক্তার জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে এসব লাশ দাফন কাফনের বিষয়টি দেখভাল করা হচ্ছে। আর সরকার বা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা দেওয়া হলে তা পৌঁছে দেওয়া হবে।