‘রেজা-সুজাত ভাই ভাই, আর কোনো বিভেদ নাই’
হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে অবশেষে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এক যৌথসভায় সব কোন্দলের অবসান হয়েছে। ড. রেজা কিবরিয়া ও বিএনপির সাবেক সাংসদ শেখ সুজাত মিয়া হাতে হাত রেখে ‘খালেদা জিয়া’র মুক্তির জন্য এক সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।
নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলার কয়েক হাজার নেতাকর্মীর পরামর্শ সভায় ড. রেজা কিবরিয়া ও শেখ সুজাত হাতে ধানের শীষ নিয়ে স্লোগান তোলেন ‘রেজা-সুজাত ভাই ভাই, ধানের শীষে ভোট চাই’, ‘রেজা-সুজাত ভাই ভাই, আমাদের কোনো বিভেদ নাই’। এ সময় নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে তোলেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নবীগঞ্জ পৌর শহরের গোল্ডেন প্লাজায় উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের যৌথ পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ শেখ সুজাত মিয়া। পৌর বিএনপির নেতা মুশফিকুজ্জামান চৌধুরী নোমান ও ছাত্রদল নেতা অলিউর রহমানের যৌথ পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান শেফু ও পৌর বিএনপির সভাপতি মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী, বাহুবল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আকাদ্দছ মিয়া বাবুল, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শিহাব আহমদ চৌধুরী, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক যুবরাজ গোপ প্রমুখ।
সভা চলাকালে হবিগঞ্জ-১ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী ড. রেজা কিবরিয়া এসে উপস্থিত হলে হাজারো নেতাকর্মী তাঁকে স্বাগত জানান। এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তির জন্য এই নির্বাচন। আমি এ নির্বাচনে জয়ী হতে সাবেক সাংসদ শেখ সুজাতের সহযোগিতা চাচ্ছি। আমি জানি শেখ সুজাত একজন জনপ্রিয় নেতা। এই কয়েকদিনে আমি বুঝতে পেরেছি তাঁকে ছাড়া এই নির্বাচনে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। তাই দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি ও তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনতে গণতন্ত্র রক্ষায় দেশের মানুষকে শান্তি ফিরিয়ে দিতে ধানের শীষে ভোট দিবেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, আমার নির্বাচনী কাজে শেখ সুজাত মিয়া নেতৃত্ব দিবেন। আমি অত্র এলাকার সবাইকে চিনি না, শেখ সুজাত মিয়া সবাইকে চিনেন এবং জানেন। তাই তাঁর নির্দেশেই আমার নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা হবে।
ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে অনেক হুমকি, ষড়যন্ত্র চলছে। সে সব মোকাবিলা করে ৩০ তারিখে ভোট দিতে হবে। রাতে পুলিশ ১৬ বছরের কিশোর ও ৭০ বছরের বৃদ্ধকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, নেতাকর্মীদের ঘরে ঘুমাতে দিচ্ছে না। আগামী ৩০ ডিসেম্বর আমাদের সবাইকে হুমকি-ধমকি মোকাবিলা করে ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে হবে।
এরপর ‘রেজা-সুজাত ভাই ভাই, ধানের শীষে ভোট চাই’, ‘রেজা-সুজাত ভাই ভাই, আমাদের কোনো বিভেদ নাই’ স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শুরু করেন বিএনপির দুইবারের সাবেক সাংসদ শেখ সুজাত মিয়া। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে আজ থেকে আর কোনো বিরোধ নেই। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আমরা দুই ভাই মিলেমিশে কাজ করব। আমি মনে করি, অত্র এলাকার আগামী দিনের সাংসদ ড. রেজা কিবরিয়া। আর তাঁকে নিয়েই নবীগঞ্জ-বাহুবলের উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করব। মামলা, হামলা, ভয়ভীতি হুমকি যাই আসুক, আজ থেকে এক পা পিছু হব না। ৩০ ডিসেম্বর ধানের শীষকে বিজয়ী করে ঘরে ফিরব।
পরামর্শ সভা শেষে ড. রেজা কিবরিয়া ও সাবেক সাংসদ শেখ সুজাতের নেতৃত্বে একটি মিছিল নবীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
ওই পরামর্শ সভার আগে ড. রেজা কিবরিয়া বাহুবল উপজেলার রইছগঞ্জ বাজার ও বাহুবল সদরে গণসংযোগ করেন। এরপর তিনি নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নবীগঞ্জ পৌরসভার জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব বিএনপি নেতা মরহুম অ্যাডভোকেট আবদুস শহীদ গোলাপের বাসভবনে গিয়ে কিছু সময় কাটান এবং পরে তাঁর কবর জিয়ারত করেন।