বাবার বাড়ি বেড়াতে এসে ‘ধর্ষণের শিকার’ পাকিস্তানি কিশোরী
মায়ের সঙ্গে বাবার পৈতৃক বাড়ি বাংলাদেশে বেড়াতে এসে পাকিস্তানি নাগরিক এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ। টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানায় দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই কিশোরীকে অপহরণের পর ধর্ষণ করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার একটি গ্রাম থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী পাকিস্তানের করাচিতে একটি সরকারি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে গোপালপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, পঁচিশ বছর আগে ব্যবসা করার জন্য বাংলাদেশের টাঙ্গাইল থেকে পাকিস্তানে যান ওই কিশোরীর বাবা। তিনি সেখানে গার্মেন্টের ব্যবসা করতেন। একপর্যায়ে সেখানে তিনি এক পাকিস্তানি নারীকে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। কিশোরীর জন্মও পাকিস্তানের করাচিতে। সেখানেই একটি সরকারি স্কুলে সে নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
কিশোরীর বাবার টাঙ্গাইলের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তিনি কয়েক বছর আগে হঠাৎ করেই মারা যান। প্রায় পাঁচ মাস আগে মায়ের সঙ্গে কিশোরী তার বাবার পৈতৃক বাড়িতে বেড়াতে আসে। বাবার এক বড় ভাইয়ের বাড়িতে ওঠে কিশোরী। সেখান থেকেই এক আত্মীয় যুবক তাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, ‘পাঁচ মাস আগে মেয়েকে নিয়ে গোপালপুরে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন পাকিস্তানি মা। তিনি উঠেছিলেন তাঁর স্বামীর বড় ভাই, অর্থাৎ ভাশুরের বাড়িতে। সেই বাড়িতেই আরেক ভাশুরের ছেলে কিশোরীকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসার চেষ্টাও করা হয়।’
এরই মধ্যে মা ও মেয়ের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছিল। ফলে পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এ কথা জানতে পেরে উত্ত্যক্তকারী যুবক ক্ষুব্ধ হয়।
ওসি আরো বলেন, গত বুধবার রাতে কয়েকজন ওই কিশোরীকে কৌশলে অপহরণ করে। এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন কিশোরীর মা। মামলার আসামি ‘উত্ত্যক্তকারী’ যুবকের মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন জানান, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে কিশোরীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু সে বাংলা বলতে না পারায় এবং দোভাষী না পাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার আদালতে কিশোরীর ২২ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।