নুসরাত হত্যায় কামরুন ও জাবেদের স্বীকারোক্তি
ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন দুই আসামি কামরুন নাহার মনি ও জাবেদ হোসেন।
শনিবার বিকেলে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সরফ উদ্দিনের আদালতে দুজনকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য হাজির করা হয়। রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আদালতে জবানবন্দি দেন আসামিরা। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল একথা জানিয়েছেন।
এ মামলায় এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শনিবার রাঙ্গামাটি থেকে ইফতেখার মাহমুদ রানা ও কুমিল্লা থেকে মো. মামুন নামের সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করে পিবিআই। আগামীকাল রোববার এই দুজনকে আদালতে হাজির করা হবে বলে জানান পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার।
এছাড়াও শনিবার বিকেলে একই আদালতে সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি রুহুল আমিনকে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে হাজির করে পিবিআই। শুনানি শেষে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সরফ উদ্দিন পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে আগুনে পুড়িয়ে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি বোরকা সোনাগাজী পৌর শহরের সরকারি কলেজ সংলগ্ন ডাঙ্গি খাল থেকে জব্দ করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর এ মামলার অন্যতম আসামি জোবায়ের হোসেনকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পিবিআই।
বোরকা জব্দের সত্যতা নিশ্চিত করে পিবিআইয়ের পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, আসামিদের পরিহিত বোরকাগুলো এ হত্যা মামলার অন্যতম আলামত।
এর আগে এ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানা যায় বোরকা পরে পাঁচজন হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছিল।
গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাতের সহপাঠী উম্মে সুলতানা পপি ওরফে শম্পা তাঁর বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে এমন সংবাদ দিলে- ওই ভবনের ছাদে যান নুসরাত। সেখানে বোরকা ও নেকাব পরা চার-পাঁচজন তাঁকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। নুসরাত অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
গত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরাত।