ধর্ষণ মামলায় বাসের চালকসহ চারজনের যাবজ্জীবন
টাঙ্গাইলে ধর্ষণ মামলায় চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল এক পোশাকশ্রমিক টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে চলন্ত বাসে ধর্ষণের শিকার হন। ওই বাসের চালকসহ চারজনকে ওই সাজা দিলেন আদালত।
টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন আজ বুধবার দুপুরে এ রায় দেন। প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আদালতে তিনজন আসামি উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন বাসের চালক হাবিবুর রহমান নয়ন (২৮), সহকারী খালেক ভুট্টো (২৩), আশরাফুল (২৬) ও সুপারভাইজার রেজাউল করিম জুয়েল (৩৮)। তাঁদের মধ্যে রেজাউল করিম জুয়েল পলাতক।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) নাসিমুল আক্তার নাসিম। তিনি বলেন, ‘এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গণধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে এ রায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে।’
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী শামীম চৌধুরী বলেন, ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি।’ এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন তাঁরা।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল কালিয়াকৈরের মৌচাকে কর্মরত এক পোশাককর্মী টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ভোর ৫টার দিকে ‘বিনিময় পরিবহনের’ একটি বাসে ওঠেন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে। ওই সময় বাসে অন্য কোনো যাত্রী ছিল না। এ সুযোগে বাস কিছুদূর যাওয়ার পর বাসচালকের সহকারী বাসের জানালা-দরজা বন্ধ করে দেয়। এ পর্যায়ে গাড়ির চালক হাবিবুর রহমান নয়ন ওই নারীকে ধর্ষণ করে। পরে পালাক্রমে অন্য আসামিরাও ধর্ষণ করে। বাসটি ঢাকা না গিয়ে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের একটি নির্জন জায়গায় ওই নারীকে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাসের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারকে ওই দিনই গ্রেপ্তার করে। ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।