মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে যৌন হয়রানির মামলাও ট্রাইব্যুনালে
বহুল আলোচিত ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানির মামলাটিরও বিচারকাজ এখন থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে চলবে।
গতকাল বুধবার বিকেলে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জাকির হোসাইনের আদালতে মামলার তদন্ত কমকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহআলম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে একমাত্র আসামি করে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।
আজ বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে মামলাটি গ্রহণ বা বাতিল করার এখতিয়ার না থাকায় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আইনজীবী।
এর আগে নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলাটিও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। আজকে এই মামলায় ১৬ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এই মামলায় আজকে বিচারক মো. মামুনুর রশিদের আদালতে সাক্ষ্য দিচ্ছেন মাদ্রাসার প্রহরী মো. মোস্তফা। সাক্ষ্য শেষে তাঁকে জেরা করবেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত আলিম শ্রেণির আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় গেলে দুর্বৃত্তরা তাঁকে ডেকে কৌশলে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায়। পরে তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় দগ্ধ নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে মারা যান। পরের দিন ১১ এপ্রিল বিকেলে সোনাগাজীতে তাঁর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পরে হত্যা মামলা ও শ্লীলতাহানির মামলা হয়।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে প্রধান আসামিসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। পিবিআই ও পুলিশ এ মামলায় ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে হত্যায় সরাসরি জড়িত পাঁচজনসহ ১২ জন আসামি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গত ২৯ মে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসেনের আদালতে নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত কমকর্তা পিবিআইর পরিদর্শক শাহ আলম আদালতে ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে ২০ জুন এই মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় এবং মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।