অপহরণের পর ভাতিজাকে হত্যার পর গুম, র্যাব সদস্য গ্রেপ্তার
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পাট্টাশরিফ গ্রামের পাঁচ শতক জমির জন্য ভাতিজাকে অপহরণের পর খুন করে ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে লাশ ফেলে দেন র্যাব সদস্য চাচা ছাদেক মিয়া। বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমন দাবি করেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ উল্ল্যা।
এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় ছাদেক মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে এ ঘটনায় আরো চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসপি বলেন, র্যাব সদস্য ছাদেক মিয়ার ভাতিজা দুলা মিয়া তাঁর পাঁচ শতক জমি অন্যের কাছে বিক্রি করেন। ছাদেক তাঁর ভাতিজার কাছ থেকে ওই জমি কিনতে না পেরে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেন। তাতেও কোনো কাজ না হওয়ায় ছাদেক মিয়া ঢাকা থেকে লোক ভাড়া করে ভাতিজা দুলা মিয়াকে গ্রাম থেকে অপহরণ করে ঢাকায় নিয়ে যান। ঢাকার হাজারীবাগ এলাকায় সিকদার মেডিকেলের পেছনে বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে নিয়ে তাঁকে হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে পানিতে ফেলে দেন।
পুলিশ সুপার জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এক আসামিকে ধরার পর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা স্বীকারোক্তিতে দুলা মিয়াকে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দেয় এবং ছাদেক মিয়ার ভাড়াটে হিসেবে খুন করার কথাও স্বীকার করে।
নিহত দুলা মিয়ার জমি, যেটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে নিজের চাচার রোষানলে পড়ে খুন হতে হয় দুলা মিয়াকে। ছবি : এনটিভি
গত ১৭ জুন অপহৃত হন দুলা মিয়া। এ ঘটনায় ১৯ জুন চুনারুঘাট থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন তাঁর ভাই ইদু মিয়া। ১৮ জুন তাঁর মরদেহ বুড়িগঙ্গা নদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশ আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে ঢাকায় জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বুধবার সকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চুনারুঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দুলা মিয়ার মরদেহ জুরাইন কবরস্থান থেকে উত্তোলন করে চুনারুঘাটে নিয়ে আসেন।
নিহত দুলা মিয়ার পাঁচ কন্যা সন্তান। এর মধ্যে চারজনের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ে রাশিদা প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে নিয়েই বসবাস করতেন দুলা মিয়া।