নুসরাতের বাবা, মামা ও চাচাতো ভাইয়ের সাক্ষ্য
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় আজ তাঁর বাবা, মামা ও চাচাতো ভাই আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচার নিষ্পত্তি হতে পারে বলে আশা করছেন বাদীপক্ষের আইনজীবীরা।
মামলার ২৮তম কার্যদিবসে আজ সোমবার দুপুরে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারিক হাকিম মো. মামুনুর রশিদের আদালতে সাক্ষ্য দিতে হাজির হন নুসরাতের বাবা মাওলানা এ কে এম মুছা, মামা সৈয়দ সেলিম ও চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলী ফরহাদ। একই সময়ে ফেনী কারাগার থেকে মামলার ১৬ আসামিকেও আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আকরামুজ্জামান বলেন, ট্রাইব্যুনালে ১৮০ দিনের মধ্যে এ মামলার নিষ্পত্তির বাধ্যবাধকতা থাকায় বিচার শুরুর পর থেকে প্রতি কার্যদিবসেই আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরার কাজ চলছে।
আজকের আগ পর্যন্ত এ মামলার বিচার শুরুর ২৭ কার্যদিবসে ৫৮ সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রদান ও জেরা শেষ হয়েছে। আজ মামলার ২৮তম কার্যদিবসে আদালতে মামলার সাক্ষী নুসরাতের বাবা, মামা ও চাচাতো ভাই সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ মামলার অভিযোগপত্রে পিবিআই ৯২ সাক্ষীর নাম উল্লেখ করেছে।
সাক্ষ্য প্রদান শেষে আসামিদের আইনজীবীরা তাঁদের তিনজনকে জেরা করেন। এর আগে গতকাল রোববার সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরার কাজ শেষে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তা মুলতবি করেন বিচারক মামুনুর রশিদ।
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত পরীক্ষায় অংশ নিতে মাদ্রাসায় গেলে দুর্বৃত্তরা তাঁকে ডেকে কৌশলে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায়। পরে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পাঁচ দিন পর ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নুসরাতের।
পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
এ মামলায় পিবিআই ও পুলিশ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার দায় স্বীকারকারী পাঁচজনসহ মোট ১২ জন স্বীকারোক্তি দেন।
পরবর্তী সময়ে গত ২৯ মে নুসরাত হত্যা মামলার তদন্তকারী কমকর্তা পিবিআই পরিদর্শক শাহ আলম জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসেনের আদালতে ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে এর বাইরে থাকা পাঁচ ব্যক্তিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত।