বিমর্ষ চেহারায় আদালতে ঐশী
পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলার রায় নিয়ে সকাল থেকেই কৌতূহল ছিল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে।
বেলা ১১টার দিকে মামলার প্রধান আসামি ও দম্পতির মেয়ে ঐশী রহমানকে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে নেওয়া হয়। প্রিজন ভ্যান থেকে নামানোর পর দুজন নারী পুলিশ সদস্য ঐশীকে নিয়ে এজলাস কক্ষের দিকে রওয়ানা হন। এভাবে আদালতের পঞ্চম তলায় ঢাকার তিন নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদের আদালতে হাজির করা হয় ঐশীকে। এ সময় তাঁকে বিমর্ষ দেখা গেছে। আদালতে হাজির করার সময় তাঁর মুখ ঢাকা ছিল উড়না দিয়ে।
আদালতের কক্ষে প্রবেশ করার পর ঐশীকে প্রথমে একটি বেঞ্চে বসতে দেওয়া হয়। এ সময় তিনি কারো সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
গত ৪ নভেম্বর ঢাকার তিন নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ এ মামলার রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঐশীর আইনজীবী মাহবুব হাসান রানা অনলাইনকে বলেন, ঐশী এ মামলায় খালাস পাবেন। কেন না ঐশী যে প্রাপ্তবয়স্ক তা সরকারপক্ষ প্রমাণ করতে পারেনি। আর ঘটনার দিন সে মাদকাসক্ত ছিল। সে ‘মাদকাসক্ত ছিল না’ সরকার পক্ষ এটিও প্রমাণ করতে পারেনি।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাহবুবুর রহমানের সহকারী আইনজীবী ফয়সাল ভূঁইয়া অনি বলেন, ‘এ মামলায় ঐশীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। ঐশীর বয়স ১৯ বছর তাও প্রমাণিত হয়েছে এবং ঘটনার দিন সে মাদকাসক্ত ছিল না। এ ছাড়া মামলার অন্যতম আসামি কাজের মেয়ে সুমিও জবানবন্দি দিয়ে বলেছে, ঐশীই তাঁর মা-বাবাকে ছুরি দিয়ে হত্যা করেছে।’
ফয়সাল ভূঁইয়া অনি আরো বলেন, ‘আমরা ঐশীসহ সবার মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রত্যাশা করছি।’
ঐশী ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন ঐশীর বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি ও আরেক বন্ধু মিজানুর রহমান রনি।
রনি এ মামলায় জামিনে থাকলেও বিচারক আজ তাঁর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে জনি শুরু থেকেই কারাগারে আটক রয়েছেন।
এ মামলায় বিভিন্ন সময়ে ৪৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (রাজনৈতিক শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরের দিন ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন।