ঐশীর মৃত্যুদণ্ড
পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায়ে মেয়ে ঐশী রহমানকে দুবার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। প্রত্যেক মৃত্যুদণ্ডের সঙ্গে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে দুই বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে একটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর অন্যটি সরাসরি বাতিল হয়ে যাবে।
একই সঙ্গে ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে দুই বছর কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মামলার অপর আসামি আসাদুজ্জামান জনিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন।
বিচারক রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ ঐশীর প্রকৃত বয়স প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আর সে যে সাবালিকা, এটাও প্রমাণ হয়েছে।’ আসামিপক্ষ ঐশীর বয়সের পক্ষে যা যুক্তি দিয়েছে, তা যথাযথ নয় বলে মন্তব্য করেন আদালত। পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘ঘটনার দিন ঐশী নেশাগ্রস্ত ছিল। তার ক্রিমিনাল ইনটেন্ট (অপরাধ সংঘটনের ইচ্ছা) ছিল। হঠাৎ করেই কোনো উত্তেজনা ছিল না, পূর্বপরিকল্পিতভাবে সে তার বাবা-মাকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করে। সে সুকৌশলে কফির সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তার বাবা-মাকে হত্যা করেছে।’
আজ বেলা ১১টার দিকে ঐশীকে আদালতে নেওয়া হয়। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ রায় পড়া শুরু করেন।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ ঐশীকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক আবুল খায়ের।
পরে গত বছরের ৩০ নভেম্বর ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ বি এম সাজেদুর রহমান তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এ মামলায় বিভিন্ন সময়ে ৪৯ সাক্ষীর মধ্যে ৩৭ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। একই দিন পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করেন ঐশী।