জবানবন্দিতে যা বলেছিলেন ঐশী ও সুমি
মা ও বাবাকে হত্যার দায় স্বীকার করে ২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম আনোয়ার সাদাতের খাস কামরায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন মেয়ে ঐশী ও অপর আসামি গৃহপরিচারিকা খাদিজা খাতুন সুমী।
ঐশী জবানবন্দি দিয়ে বলেছিলেন, ‘ঘটনার আগের দিন জনি নামের এক বন্ধুর কাছে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানান। হত্যার পর তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার আশ্বাস দেন জনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঐশী ছয় পাতা (৬০)টি ঘুমের বড়ি কিনেন। ৩০টি করে ট্যাবলেট তিনি মা ও বাবার কফির মধ্যে মেশান। মা-বাবা কফি খাওয়ার পর অবচেতন হয়ে পড়েন। এর পর তিনি বাবাকে ছুরিকাঘাত করেন। বাবা গোঙাতে থাকলে ওড়না দিয়ে তিনি রক্তক্ষরণ বন্ধ করেন। এরপর বাবার গোঙানির শব্দে মা জেগে ওঠেন। মা পানি চান। মাকে পানিও দেন তিনি। পানি খাওয়া শেষ হলে মাকে কয়েকদফা ছুরিকাঘাত করেন তিনি। শেষে মায়ের শ্বাসনালিতে ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন তিনি। এর পর ঐশী ও গৃহকর্মী সুমি দুজনে মিলে লাশ বাথরুমে নিয়ে লুকিয়ে রাখেন। রক্ত পরিষ্কার করে সকালে তাঁরা বেরিয়ে যান।’
সুমি যা বলেন
অন্যদিকে গৃহপরিচারিকা শিশু সুমি জবানবন্দিতে বলে, ‘হত্যাকাণ্ডের সময় ঐশী আপু আমাকে ও ঔহি ভাইয়াকে (ঐশীর ছোট ভাই) একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। হত্যাকাণ্ড শেষ হওয়ার পর ঐশী আপু আমাকে বলে মেঝে হতে রক্তগুলো পরিষ্কার করতে। ঐশী আপুর কথা মেনে আমি রক্তগুলো পরিষ্কার করি।’
২০১৪ সালের ৯ মার্চ ঐশীকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক আবুল খায়ের।
পরে গত বছরের ৩০ নভেম্বর ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ বি এম সাজেদুর রহমান তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান এবং তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।