আ.লীগ-বিএনপির বড় চ্যালেঞ্জ স্বতন্ত্র প্রার্থী
খাগড়াছড়ি পৌরসভার পথচলা শুরু হয় ১৯৮৪ সালে। ২০০৫ সালে এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। হিসাব অনুযায়ী এ বছরের নির্বাচন পৌরসভার ষষ্ঠ নির্বাচন। পরিসংখ্যান বলছে, গত ৩১ বছরে আওয়ামী লীগ বা বিএনপি সমর্থিতরাই এ পৌরসভায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে খাগড়াছড়িতে জমে উঠেছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। উঠান বৈঠক, গণসংযোগ, মাইকিং আর পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। ভোটারদের মন জয় করতে প্রার্থীরা দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন পাঁচজন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শানে আলম, ধানের শীষ প্রতীকে জেলা বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক আবদুল মালেক মিন্টু, লাঙ্গল প্রতীকে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. ইছহাক, মোবাইল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী, বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সেক্রেটারির ছোট ভাই রফিকুল আলম এবং নারকেলগাছ প্রতীকে অনিবন্ধিত আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ প্রার্থী কিরণ মারমা।
প্রথমবারের মতো এবার দলীয় প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মেয়র প্রার্থীরা। তাই নৌকা-ধানের শীষের জন্য ভোট চাইছেন মেয়র পদের প্রার্থীদের সমর্থকরা। প্রার্থীরা রাত-দিন পৌরসভার অলিগলি চষে বেড়াচ্ছেন। উঠান বৈঠক আর গণসংযোগ করছেন। দিচ্ছেন নির্বাচিত হলে কী করবেন, সেই প্রতিশ্রুতি।
এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি প্রার্থীর জন্য সবেচয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বর্তমান পৌর মেয়র রফিকুল আলম। কারণ, বর্তমান মেয়র হিসেবে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা যেমন রয়েছে, তেমনি আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ এবং বিএনপির সমীরণ দেওয়ান গ্রুপের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে তাঁর পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রচারে অংশ নিয়েছে। ফলে বড় দুই দলের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ আর বিএনপি নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়াই করলেও নিজের মোবাইল প্রতীকের প্রতি পূর্ণ আস্থা রয়েছে রফিকুল আলমের। ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’
নির্বাচনী প্রচারে বাধা দেওয়াসহ প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ এনেছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী। অন্যদিকে তিন বাঙালি প্রার্থীর লড়াইয়ের সুযোগে কৌশলে ফসল ঘরে তুলতে চান ইউপিডিএফের স্বতন্ত্র প্রার্থী কিরণ মারমা।
নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদেরও রয়েছে কিছু চাওয়া-পাওয়া। সাধারণ ভোটাররা চাইছেন শুধু মার্কা আর প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নয়, বরং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, যাঁকে বিপদে-আপদে স্থানীয়রা কাছে পাবেন, যিনি এলাকার উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবেন এমন প্রার্থীকেই মেয়র হিসেবে বেছে নেবেন তাঁরা।
৩৩ হাজার ৬১৯ ভোটারের এ পৌরসভায় দল না স্বতন্ত্র প্রার্থী—কে হাসবেন শেষ হাসি, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ভোটের দিন পর্যন্ত।