অস্তিত্ব রক্ষায় পরিবর্তন : এরশাদ
অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই দলে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।
আজ মঙ্গলবার সাবেক এ রাষ্ট্রপতি কো-চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদের ও মহাসচিব হিসেবে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার সময় এ কথা বলেন। এ সময় দুই নেতাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
অপরদিকে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বলেছেন, কথাসর্বস্ব নয়, শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টিকে তুলে ধরতে চান তাঁরা।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ জানান, বয়স ও শারীরিক বিবেচনায় রওশনকে এই পদের জন্য মনোনীত করা হয়নি। জি এম কাদেরই তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী।
এরশাদ বলেন, ‘বিএনপি আজকে বিধ্বস্ত। সব নেতাকর্মীরা জেলে। তাও তারা পৌরসভা নির্বাচনে ২৪টি জায়গায় জিতেছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। আমরা বেঁচে আছি, বাইরে আছি, সভা-সমাবেশ করছি। তা সত্ত্বেও জনগণের আস্থা আমাদের ওপর নেই।’
সাবেক এ রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, ‘রওশন তো গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে বেড়াতে পারবেন না। আমিও হয়তো আর বেশিদিন পারব না। জি এম কাদের হয়তো পারবেন।’
দায়িত্ব বুঝে পেয়ে নবনিযুক্ত কো-চেয়ারম্যান ও মহাসচিব জাতীয় পার্টির ইমেজ পুনরুদ্ধারই প্রধান লক্ষ্য বলে জানান।
এ সময় দলের কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা কৃত্রিমতা পছন্দ করি না। আমরা ছল-চাতুরি পছন্দ করি না। রাজনীতি করতে চাই স্বচ্ছ। জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করতে চাই।’
মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, মুখের কথায় বিরোধী দল হওয়া যাবে না। কর্মকাণ্ড দিয়ে প্রমাণ করতে হবে আমরা বিরোধী দল। দলকে সংগঠিত করা, দলকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই মূল কর্তব্য।’
এ ছাড়া ত্যাগী নেতাদের পুনর্মূল্যায়ন এবং সবার অংশগ্রহণে কাউন্সিল করা হবে বলেও জানান দলের মহাসচিব।
এইচ এম এরশাদ গত রোববার রংপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ছোট ভাই জি এম কাদেরকে জাপার কো-চেয়ারম্যান এবং দলে তাঁর উত্তরসূরি ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে জি এম কাদেরকে আহ্বায়ক এবং এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদারকে সদস্য সচিব করে জাপার ত্রিবার্ষিক সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করেন।
এরশাদের ওই ঘোষণায় দলের ভেতরে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। পরের দিনই স্ত্রী রওশনের নেতৃত্বে দলের একটি অংশের বিদ্রোহের মুখে পড়েন এরশাদ।
দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলু ও ১৮ সংসদ সদস্যসহ একটা অংশ পরের দিন সোমবার যৌথ সভা করে রওশন এরশাদকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করে। ওই ঘোষণার এক ঘণ্টার মাথায় রংপুরে এরশাদ এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘রওশনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করাটা অবৈধ।’
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার সকালে সফর সংক্ষিপ্ত করে রংপুর থেকে ঢাকায় ফেরেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। দুপুরে রাজধানীর বনানীতে দলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মহাসচিব পদ থেকে জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বাবলুকে নিজস্ব ক্ষমতাবলে অব্যাহতি দেন। একইসঙ্গে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে পুনরায় মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা করেন।