নবীগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী পলাতক
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামে রোববার গভীর রাতে শেলী বেগম নামের এক গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার সকালে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ঘটনার পর থেকে শেলীর স্বামী শিপন মিয়া ও তাঁর পরিবারের লোকজন পলাতক। শিপন ও শেলীর তিন বছর বয়সের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গুমগুমিয়া গ্রামের মৃত ইসরাইল মিয়ার ছেলে শিপন মিয়ার সঙ্গে প্রায় চার বছর আগে একই গ্রামের ছনর মিয়ার মেয়ে শেলী বেগমের (২৫) বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কহল চলে আসছিল। বিয়ের এক বছর পর তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। তাদের কহল নিয়ে একাধিকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সালিশ বসে। প্রায় এক মাস আগেও শেলী বেগম স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে বাবার বাড়ি চলে যান। পরে স্থানীয় মুরব্বিরা বিষয়টি সমাধান করে শেলী বেগমকে স্বামীর বাড়ি ফিরিয়ে দেন।
গত রোববার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন শিপন ও শেলী বেগম। রাতে ঘুমানোর সময় শিপন শেলীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন বলে দাবি করেছেন শেলীর পরিবারের লোকজন।
সকালে শিপন মিয়ার ঘরের কোনো লোকজনের সাড়া শব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখেন বিছানার মধ্যে গৃহবধূর রক্তমাখা নিথর দেহ পড়ে আছে। স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দিলে নবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গৌর চন্দ্র মজুমদারের নেতৃত্বে উপপরিদর্শক (এসআই) চান মিয়া, এসআই প্রদ্যুৎ ঘোষ চৌধুরীসহ এক দল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
শেলী বেগমের বাবা ছনর মিয়া কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার মেয়ে শেলী বেগমকে তাঁর স্বামী সব সময়ই মারধর করতেন। রাতে শিপন ও তাঁর ভাইরা মিলে আমার মেয়েকে খুন করেছেন।’ এই কথা বলে তিনি বার বার মুর্চ্ছা যাচ্ছিলেন।
শেলী বেগমের মা সামছুন্নাহার বলেন, ‘আমার মেয়েরে তার স্বামীর বাড়ির লোকজন খুন করেছে, আমরা তার সঠিক বিচার চাই।’
নবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গৌর চন্দ্র মজুমদার জানান, চার বছর আগে শিপন ও শেলীর বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে কহল চলে আসছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে এটি পরিকল্পিত হত্যা।