চার শিশু হত্যায় দুজন রিমান্ডে
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চার শিশু হত্যার ঘটনায় আবদুল আলী বাগাল ও তাঁর ছেলে জুয়েল মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে এ দুই আসামিকে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক কাওসার আলম দুই আসামির প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে এনটিভি অনলাইনকে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন।urgentPhoto
এদিকে, আজ সকালে চার শিশুর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন দেবব্রত রায় এনটিভি অনলাইনকে জানান, ‘সকালেই পুলিশের কাছে চার শিশুর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুকের পাঁজর ভেঙে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় চার শিশুকে।’
গতকাল দুপুরে ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের নিখোঁজ হওয়া চার শিশুর লাশ পাঁচ দিন পর বাড়ির অদূরে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তারা হলো বাহুবল উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার দুই চাচাতো ভাই আবদুল আজিজের ছেলে একই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার ছেলে একই বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আবদুল কাদিরের ছেলে সুন্দ্রাটিকি মাদ্রাসার ছাত্র ইসমাঈল হোসেন (১০)।
নিখোঁজ শিশুরা শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাড়ির পাশের মাঠে খেলাধুলা করতে গিয়েছিল। সন্ধ্যার পরও তারা বাড়িতে ফিরে না আসায় অভিভাবকরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। কোথাও তাদের সন্ধান না পেয়ে শুক্রবার রাতেই মাইকযোগে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করা হয়।
আজ বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন লোক মাটি কাটতে গিয়ে বাতাসে দুর্গন্ধ পান। এরপর তাঁরা নিখোঁজ শিশুদের বাড়ির অদূরে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় একটি শিশুর হাত ও আরেক শিশুর পা দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশগুলো উদ্ধার করে।
চার শিশুর ময়নাতদন্ত হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে সম্পন্ন হয়। পরে রাতেই তাদের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
লোমহর্ষক এ ঘটনার তদন্ত করার জন্য গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন।
এদিকে নিহত শিশুদের বাড়িতে আজো শোকের মাতম বইছে। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-পড়শিরা সকাল থেকেই নিহতদের বাড়িতে এসে ভিড় করছেন।