স্বাস্থ্য সেমিনারে বিরিয়ানি খাওয়ার পর মৃত ১, অসুস্থ ৮
লক্ষ্মীপুরে একটি স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনার থেকে দেওয়া বিরিয়ানি খেয়ে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। একই খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পাঁচ চিকিৎসকসহ আটজন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও অসুস্থদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল হলরুমে স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনার আয়োজন করে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক। সে সময় সেমিনারে অংশ নেওয়া চিকিৎসকসহ অন্যদের প্যাকেট করা বিরিয়ানি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। এই বিরিয়ানি খাওয়ার পর থেকেই একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন। প্রথমে তাঁদের নিজ বাড়িতে চিকিৎসা দেওয়া হলেও পরে অবস্থা গুরুতর হলে রাত ৯টার পর থেকে তাঁদের লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. বাসেত মজুমদার জানান, গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় লিটন (৩৫) নামের এক ব্যক্তি বাঞ্ছানগর গ্রামের নিজ বাড়িতে মারা যান।
লিটনের স্ত্রী পারুল বেগম স্থানীয় উপশম হাসপাতালে আয়া হিসেবে কাজ করেন। গতকাল সেমিনার থেকে পাওয়া বিরিয়ানির প্যাকেট স্বামীর জন্য বাড়িতে নিয়ে যান তিনি। সেখানে এই বিরিয়ানি খাওয়ার পর প্রথমে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর বাড়িতেই মারা যান তিনি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডা. ওমর ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ একটা প্রোগ্রাম ছিল ব্র্যাকের। প্রি-ওরিয়েন্টেশনের ওপর একটা প্রোগ্রাম ছিল। ওই প্রোগ্রামে ওরা প্যাকেট বিরিয়ানি সার্ভ করছিল। সেই প্যাকেট বাসায় নিয়ে খাওয়ার পরে ঘণ্টা দুয়েক পরেই বমি আর পাতলা পায়খানা শুরু হলো।’
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. জয়নাল আবেদিন জানান, অসুস্থ চিকিৎসকরা হলেন—সদর হাসপাতালে ইএনটি কনসালট্যান্ট ডা. ওমর ফারুক, মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. ইকবাল হোসেন, রেডিওলজি কনসালট্যান্ট ডা. সালাউদ্দিন, মেডিকেল অফিসার ডা. চিন্ময় সাহা, ডা. বনি আদম। অসুস্থ চিকিৎসকদের সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া ডা. আবদুর রহমান খালিদের স্ত্রী ও এক শিশুসহ আরো তিনজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
জয়নাল আবেদিন আরো জানান, ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে লক্ষ্মীপুর শহরের নাছির বিরিয়ানি হাউস থেকে বিরিয়ানি এনে আপ্যায়ন করায় ব্র্যাক। বিরিয়ানি খাওয়ার পর থেকে অনেকেই পাতলা পায়খানা ও পরে বমি করতে থাকেন। অসুস্থ প্রত্যেকেরই বিরিয়ানি খাওয়ার পর থেকে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়।
গত রাতে এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে বন্ধ রয়েছে নাছির বিরিয়ানি হাউস। এর মালিক বা কর্মচারী কারো সঙ্গেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ছাড়া এ ঘটনা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি স্থানীয় ব্র্যাক কর্মকর্তারা।
তবে এ বিষয়ে এখনো কিছু জানে না লক্ষ্মীপুর থানা। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, এ বিষয়ে তিনি এখনো কিছু জানেন না। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।