স্কুলশিক্ষক হত্যার প্রতিবাদে রামগঞ্জে বিক্ষোভ
কুমিল্লায় বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন হওয়া অজ্ঞাত পরিচয়ের মৃতদেহটি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অহিদুর রহমান অভির। তাঁকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে।
এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। আজ শুক্রবার দুপুরে রামগঞ্জের ফতেহ্পুর গ্রামবাসীর উদ্যোগে রামগঞ্জ পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন স্থানীয় স্কুলশিক্ষক কামাল হোসেন, ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা রামগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের নেতা মাহমুদুর রহমান রাজু, রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রাকিবুল হাসান মাসুদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ হোসেন, আবদুর রহমান সুমন ও চণ্ডীপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মো. ইউছুফ প্রমুখ।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল সোয়া ৮টায় ঢাকা-চট্টগাম মহাসড়কের চান্দিনা কাঠেরপুল এলাকা থেকে চান্দিনা থানার পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয়ের (৩০) এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে। পরিচয় না পাওয়ায় ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ বেওয়ারিশ হিসেবে মৃতদেহটি আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করে।
মৃতদেহটি রামগঞ্জ উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়নের ফতেহ্পুর গ্রামের মৃত হাজি আবদুর রবের ছেলে রামগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অহিদুর রহমান অভির।
এদিকে অজ্ঞাত পরিচয়ের একটি মৃতদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের খবর পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার নিহতের স্ত্রী সোনিয়া বেগম ও ভাই আনোয়ার হোসেন চান্দিনা থানায় গিয়ে ছবি দেখে এবং হাতের রুপার আংটি (রিং) দেখে পরিচয় নিশ্চিত করেন।
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রসুল আহমদ নিজামী জানান, চেষ্টা করেও পরিচয় না পাওয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমান মফিদুলে মৃতদেহটি দাফন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। লাশ দাফনের পর নিহতের ভাই, স্ত্রীসহ স্বজনরা চান্দিনা থানায় এসে ছবি দেখে লাশ শনাক্ত করেছেন।
নিহতের ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর ভাই স্কুলশিক্ষক অহিদুর রহমান অভি তাঁর সন্তানকে চিকিৎসক দেখাতে স্ত্রীসহ ঢাকার তাঁর রায়েরবাগের বাসায় যান। শুক্রবার সন্তানকে চিকিৎসক দেখিয়ে সন্ধ্যার আগে বাসায় ফিরেন। সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হয়ে তিনি নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজ করেও তাঁকে না পাওয়ায় ২১ ফেব্রুয়ারি কদমতলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
নিহত স্কুলশিক্ষকের ভাইয়ের অভিযোগ, তাঁর ভাই অভি ঢাকায় দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবার বাসায় (শ্বশুরের বাসায়) যাওয়ার পর দ্বিতীয় স্ত্রী ও শ্বশুর পক্ষের লোকজন অপহরণের পর হত্যা করে।
দ্বিতীয় স্ত্রী তামান্না রামগঞ্জের চণ্ডীপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের তবারক উল্যাহর মেয়ে। তাঁর পরিবার বর্তমানে ঢাকার মুগদায় বসবাস করছে। ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে স্কুলশিক্ষক অভি গোপনে তামান্নাকে বিয়ে করেছেন বলে জানা গেছে।
তবে এ ব্যাপারে দ্বিতীয় স্ত্রী তামান্নার পরিবারের কারো সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।