পিরোজপুরে ব্যালট বাক্স ছিনতাই, গুলি
বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া প্রায় শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলো পিরোজপুরের ৩৬৬টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ। তবে কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া ও ভোটারদের প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করার অভিযোগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জেলার নেছারাবাদের আওয়ামী লীগ দলীয় ও স্বতন্ত্র দুজন এবং বিএনপি দলীয় তিন ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে মঠবাড়িয়া উপজেলার ধানী সাফা ইউনিয়নের পাতাকাটা মুজাহার হাজি বাড়ি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর কর্মীরা ভোটকেন্দ্র দখল করতে গেলে পুলিশ চারটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
বেলা সাড়ে ১১টায় কাউখালীর সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়নের হোগলা বেতকা হাইস্কুল কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় ছিনতাইকারীদের হামলায় এক সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আহত হন। ছবি তুলতে গেলে আরটিভি ও বিজয় টিভি সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়।
দুপুর ১২টায় ভান্ডারিয়া উপজেলার ইকড়ি ইউনিয়নের মধ্য সিংখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর কর্মীরা কেন্দ্র দখল করতে গেলে পুলিশ দুটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। পরে সেখানে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
দুপুর ২টার দিকে কাউখালী উপজেলার দক্ষিণ শিয়ালকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর কর্মীরা ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের প্রচেষ্টা চালালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ছয়টি গুলি চালায়। ভিন্ন ঘটনায় ওই কেন্দ্রের দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ ঘটলে ওই কেন্দ্রের নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় দুজন আহত হন।
এ ছাড়া কাউখালীর আরো পাঁচটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় ভান্ডারিয়ার দুটি ও মঠবাড়িয়ার দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে চিড়াপাড়া ইউনিয়নের বড় বেকুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা সাতটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও কিছু ব্যালট ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ফলে এ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়ে যায়।
দুপুর সাড়ে ১২টায় মঠবাড়িয়ার দাউদখালী ইউনিয়নের আনারস মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদুল আলম গিলাবাদ কেন্দ্রের কাছে গেলে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর কর্মীরা তাঁর ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে।
পিরোজপুর নেছারাবাদে পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এঁরা হচ্ছেন সারেংকাঠী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী নজরুল ইসলাম, দৈহারী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান মিন্টু, সোহাগদল ইউনিয়নে বিএনপিদলীয় প্রার্থী হুমায়ুন কবির, সমুদয়কাঠী ইউনিয়নের আবদুল মজিদ খান ও সুটিয়াকাঠী ইউনিয়নের আতিকুল ইসলাম। তাঁরা সবাই কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া ও ভোটারদের প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করার অভিযোগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।