আদালতে ভাবির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
হবিগঞ্জের মাধবপুরে পাঁচ বছরের শিশু ইসমাইলকে গলা টিপে হত্যা করেছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ভাবি শাপলা বেগম। আজ দুপুরে হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিত হাকিম নিশাত সুলতানা খাস কামরায় তাঁর জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
জবানবন্দি দেওয়ার পর দুপুর ১টায় হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র সংবাদ সম্মেলনে শাপলা বেগমের স্বীকারোক্তি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
শাপলা বেগম তাঁর স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, গত ২৬ মার্চ সকালে ইসমাইল তাঁর কাছে মজা খাওয়ার জন্য ২০ টাকা চায়। শাপলা ২০ টাকা না দিলে ইসমাইল তাকে গালি দেয়। এতে শাপলা রাগান্বিত হয়ে ইসমাইলকে খাটের উপর ফেলে গলা টিপে ধরে। এতে ইসমাইল মারা যায়। এ সময় ইসমাইল পায়খানা করে দিলে শাপলা তার প্যান্ট এবং শার্ট খুলে লাশটি ধানের গোলার নিচে লুকিয়ে রাখে। এ পরিস্থিতিতে শাপলা পরিকল্পনা করেছিল রাতের কোনো এক সময় তার মৃতদেহ পানিতে ফেলে দেবে। কিন্তু রাতে সে সুযোগ পায়নি শাপলা বেগম।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার মাধবপুর পৌর শহরের পশ্চিমপাড়ার রজব আলীর ছেলে ইসমাইল (৫) নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে বাবা রজব আলী মাধবপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশ তার সন্ধানে অভিযান চালায়। সোমবার সকালে শিশু ইসমাইলের বড় ভাই জুয়েল মিয়া ঘরের ভেতর লাশের গন্ধ পেয়ে ঘর তল্লাশি করেন এবং ভাই ইসমাইলের লাশ দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাটি জানানো হয় পুলিশকে। খবর পেয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মনির হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে ধানের গোলার নিচ থেকে ইসমাইলের লাশ উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় ইসমাইলের বাবা রজব আলী বাদী হয়ে পুত্রবধূ শাপলাকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
লাশ উদ্ধারের পর পরই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত শিশু ইসমাইলের বাবা রজব আলী, মা রহিমা বেগম, ভাই জুয়েল মিয়া ও ভাবি শাপলা বেগমকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় তাঁদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সোমবার দিবাগত গভীর রাতে থানায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে শিশু ইসমাইলকে হত্যার কথা স্বীকার করেন শাপলা বেগম। শাপলার স্বীকারোক্তির পর ইসমাইলের মা-বাবা ও ভাইকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।