সরকারি কর্মকর্তার মুখে জিয়ার নাম, আ. লীগের মারধর
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার আলোচনা সভার আয়োজন করে মাধবপুর উপজেলা প্রশাসন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম। উপস্থাপনার একপর্যায়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশাপাশি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এর পরপরই অনুষ্ঠানে উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মঞ্চে উঠে শহিদুল ইসলামকে মারধর করতে থাকেন।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহবুব আলী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মো. শাহজাহান, পৌরসভার মেয়র হীরেন্দ্র সাহা প্রমুখ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্ষুব্ধ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র শাহ মো. মুসলিমসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মঞ্চে উঠে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার ওপর চড়াও হন। তাঁকে মারধর থেকে বাঁচাতে এমপি মাহবুব আলী এগিয়ে এলে তিনিও ধাক্কাধাক্কির শিকার হন।
এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র শাহ মো. মুসলিম, উপজেলা তরুণ লীগ সভাপতি রফিক মিয়াসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে ৪০ জনের বিরুদ্ধে মাধবপুর থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম।
শহিদুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই আমার ওপর হামলা করেছে আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা। আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।’
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র শাহ মো. মুসলিম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. শাহজাহান স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম বারবার বলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত সৈয়দ মো. কায়সারের ভাই।অনুষ্ঠানগুলোতে মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাদ দিয়ে বিএনপি নেতাদের গুরুত্ব দেওয়া হয়। এতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলামের ওপর চড়াও হন।
শাহ মো. মুসলিম আরো বলেন, ওই নির্বাচন কর্মকর্তা ১২ বছর ধরে মাধবপুরে কর্মরত। স্বাধীনতাবিরোধীদের সাথে আঁতাত করে শহিদুল ইসলাম অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোল্লা মনির হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।