বিদ্রোহী হয়ে বহিষ্কার হবিগঞ্জ আ. লীগের ৩০ নেতা
হবিগঞ্জের মাধবপুর, লাখাই ও নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. আলমগীর খানের দেওয়া তথ্যমতে, বিদ্রোহী ৩০ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশেষ করে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এমপি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরকে ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে যিনি শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করে মাধবপুরে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন, সেই বাঘাসুরা ইউপির চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন ওরফে জারু মিয়াকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অপরদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার আসামি হওয়ার পরও নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল খায়ের গোলাপ বহাল তবিয়তেই ছিলেন দলে। উপরন্তু আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্র থেকে নৌকা প্রতীক পেয়ে তিনি আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। সেই আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপকেও এবার আওয়ামী লীগ থেকে বিদায় দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী যাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে তাঁরা হলেন :
মাধবপুর উপজেলার ৩ নম্বর বহরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান, ৪ নম্বর আদাঐর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, ৫ নম্বর আন্দিউড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, ৬ নম্বর শাহজাহানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল হোসেন খান, শ্রমিক লীগ নেতা তৌফিকুর রহমান চৌধুরী ও মিজানুর রহমান, ১০ নম্বর ছাতিয়াইন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস শহিদ এবং ১১ নম্বর বাঘাসুরা ইউনিয়নে সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকারী শাহাব উদ্দিন আহমেদ ওরফে জারু মিয়া।
নবীগঞ্জ উপজেলার ৩ নম্বর ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের সায়েদ উদ্দিন জায়েদুল, ৬ নম্বর কুর্শি ইউনিয়নের আব্দুল মুকিত ও আব্দুল বাছিত চৌধুরী, ৮ নম্বর নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মিরাজ আলী, ১১ নম্বর গজনাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খয়ের গোলাপ ও শফিকুল ইসলাম সেলিম, ১২ নম্বর কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নে মো. নজরুল ইসলাম।
লাখাই উপজেলায় ২ নম্বর মুড়াকরি ইউনিয়নে আবুল কাশেম মোল্লা ফয়সল, সালাউদ্দিন সুমন ও মো. সোবহান মিয়া, ৩ নম্বর মুড়িয়াউক ইউনিয়নে মাসুক মিয়া তালুকদার, ৪ নম্বর বামৈ ইউনিয়নে সর্দার ওমর ফারুক, ফারুক আহমেদ, হারুনুর রশিদ নাঈম, কাউছার আহমেদ, জীবন মিয়া ও এনামুল হক মামুন, ৫ নম্বর করাব ইউনিয়নে জুয়েল রানা ও মো. ছফিল মিয়া, ৬ নম্বর বুল্লা ইউনিয়নে অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন শিপন, মো. গিয়াস উদ্দিন ও অমূল্য রায়।
হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. আলমগীর খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির ও সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খানের নির্দেশে ৩০ বিদ্রোহী প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থীদের কোনো প্রকার সহযোগিতা করতে পারবেন না। বিদ্রোহী প্রার্থীদের যেসব নেতা সহযোগিতা করবেন বা তাঁদের পক্ষে কাজ করবেন তাঁদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৮ মে ওই তিনটি উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।