ভোলার বিআরটিএ কার্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগ
ভোলায় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) কার্যালয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। টাকা ছাড়া এখানে কোনো কাজ না হওয়ায় সাধারণ মানুষ চরমভাবে হয়রানি আর লাঞ্ছনার স্বীকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। অন্যদিকে কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের জন্য শান্তিতে কাজ করা যাচ্ছে না।
সরেজমিন প্রতিবেদনে বিআরটিএ কার্যালয়ে গেলে উঠে আসে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির চিত্র। বিকেল ৩টা ৫৭ মিনিটে জেলা প্রশাসক কার্যালয় ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত বিআরটিএর অফিসে গেলেই দেখা যায় পুরো অফিসটি ফাঁকা। শুধু খালি চেয়ার আর টেবিল পড়ে রয়েছে। তবে বাইরে দূর-দূরান্ত থেকে গাড়ির কাগজ করতে আসা ব্যক্তিরা অপেক্ষমাণ।
ক্যামেরাসহ সাংবাদিক ঢুকছে দেখেই পেছন থেকে ঢুকলেন অফিসের যন্ত্র সহকারী মো. ফরহাদ হোসেন ও এমএলএসএস মো. নজরুল ইসলাম। সহকারী পরিচালক মো. আইয়ুব আনছারীর কথা জানতে চাইলে বলেন, তিনি ৪টার আগেই অফিস থেকে চলে গেছেন। বরিশালে উপপরিচালক মহোদয়ের সঙ্গে তাঁর জরুরি মিটিং আছে।
তবে ওই সময়েই উপপরিচালক মো. সহিদুল্লা কায়সারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওই কর্মচারীরা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলেছেন। আমার সঙ্গে সহকারী পরিচালকের কোনো মিটিং নেই। তিনি প্রতি সপ্তাহে পাঁচ দিন অফিস করবেন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।’
গাড়ির কাগজপত্র নিয়ে আসা মানুষকে গালমন্দ ও টাকা ছাড়া কাজ না করার বিষয়ের অভিযোগের বিষয়ে অবহিত করলে সহিদুল্লা কায়সার বলেন, বিষয়টি আগে তিনি জানতেন না। কেউ তাঁকে জানায়নি। এখন তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
এদিকে গত সোমবার গাড়ির কাগজপত্র করতে আসা একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিআরটিএ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা মানুষকে নানা হয়রানি করছেন। পাঁচ হাজার টাকা গাড়িপ্রতি দাবি করছেন। না দেওয়ায় কাগজ ধরছেন না। অনুরোধ করলে গালমন্দ করে বের করে দেন।
সহকারী পরিচালক মো. আইয়ুব আনছারী টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমি নেই না। ওরা (বিআরটিএ এর অন্য কর্মকর্তারা) চা-পানি খাওয়ার জন্য নিয়ে থাকে। তা ছাড়া কিছু খরচ তো আছে। সরকারি টাকা ছাড়া আরো খরচ আছে।’ তিনি জানান, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সুপারিশের জন্য শান্তিতে কাজ করা যায় না।
এরপর প্রতিবেদক সাধারণ মানুষকে গালমন্দ করা আর সপ্তাহে তিন দিন অফিস করার বিষয়টি জানতে চাইলেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। প্রতিবেদকে বলতে থাকেন, ‘আপনারা যা পারেন লেখেন। তাতে আমার কিছু আসে যায় না। আমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না।’