হবিগঞ্জে ৩০ ঘণ্টা পর অপহৃত যুবক উদ্ধার, আটক চার
হবিগঞ্জে অপহৃত হওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর আলমগীর মিয়া (৩৫) নামের এক যুবককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে চার যুবককে আটক করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাতে শহরের কামড়াপুর ব্রিজ থেকে অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার ও ও চার যুবককে আটক করা হয়।
আলমগীরকে অপহরণে জড়িত সন্দেহে আটক যুবকরা হলেন—হবিগঞ্জ শহরের উমেদনগর গ্রামের নোমান মিয়া (২০), পাথারিয়া গ্রামের কাশেম (২২), কাউছার মিয়া (২০) ও উজ্জ্বল মিয়া (২২)।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের প্রয়াত করিম হোসেনের ছেলে আলমগীর ওরফে লঙ্গী মিয়া। তিনি বিদেশে যাওয়ার জন্য গত রোববার দুপুরে হবিগঞ্জ শহরের ২ নম্বর পুল এলাকায় পাসপোর্ট করতে যান। একপর্যায়ে তাঁর পরিচিত শহরতলির পাথারিয়া গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে ‘মাদকসম্রাট’ রাসেল মিয়া ফোন করে সন্ধ্যায় তাঁকে কামড়াপুর ব্রিজে নিয়ে যান। পরে রাসেলের সঙ্গে থাকা আরো সাত-আটজন লোক আলমগীরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। এর পর ফজরের আজানের আগমুহূর্তে তাঁকে একটি পার্শ্ববর্তী হাওরে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার সকালে অপহরণকারীরা আলমগীর মিয়ার বাড়িতে ফোন করে তাঁর ভাই আবদুল মালেকের কাছে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অন্যথায় আলমগীরকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয় তারা।
অপহরণকারীদের কথামতো আলমগীরের ভাই টাকা দিতে রাজি হন এবং তাদের সঙ্গে এক লাখ ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে অপহৃত আলমগীর মিয়াকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত আনার চুক্তি করেন।
অপহরণকারীদের সঙ্গে চুক্তি করার পর মালেক বিষয়টি হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অবহিত করলে কৌশলে পুলিশ সাদা পোশাকে আবদুল মালেকের সঙ্গে কামড়াপুর ব্রিজে যান। সেখানে অপহরণকারীরা টাকা নিতে গেলে সদর থানার ওসি (তদন্ত) বিশ্বজিৎ দেব, উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানসহ একদল পুলিশ চারজনকে আটক করে। এ সময় অপহরণকারীদের মূল হোতা রাসেল মিয়া পালিয়ে যায়।
আটক চারজনের স্বীকারোক্তি মতে পুলিশ হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. নাজিম উদ্দিন। সোমবার রাত ১২টার দিকে অপহৃত আলমগীর মিয়াকে মির্জাপুরের নির্জন একটি বাড়ি থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাতেই অপহরণকারীদের শনাক্ত করতে আলমগীর মিয়াকে আটকদের সামনে নেওয়া হয়। তিনি শুধু কাশেমকে শনাক্ত করেন। বাকিদের তিনি চিনতে পারেননি বলে জানান।
এ ব্যাপারে ওসি মো. নাজিম উদ্দিন জানান, কাশেমকে ছাড়া অন্যদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না পেলে তদন্ত করে ছেড়ে দেওয়া হবে।